।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ১১ রমজান। মাগফেরাতের দশক আজ থেকে শুরু হলো। মাগফেরাত অর্থ ক্ষমা, মাফ বা পাপমোচন। দুনিয়াতে যে সমস্ত বিপর্যয় ও আজাব আসে তা মানুষের দুই হাতের কামায়। যেমন কর্ম তেমন ফল। আজ সমগ্র বিশ্ব করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত। এমতাবস্থায় আমাদের উচিৎ বেশি বেশি তওবা-এস্তেগফার করা ও মাফ চাওয়া। আমরা যতো বড় পাপীই হই না কেন, তারপরও আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভালোবাসেন। আমরা যদি খাঁটি দিলে তওবা করি তাহলে আশা করা যায় পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদের গোনাহরাশি ক্ষমা করে দিবেন এবং এই মহাবিপর্যয় থেকে উদ্ধার করবেন। আমরা মানুষ মাত্রই পাপ করবো, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আল্লাহ পাক এই পাপ মোচনেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। পাপ মোচনের উপায় হলো তওবা করা। পেনসিলের কালি যেমন ইরেজার দ্বারা মুছা যায় ঠিক তেমনি তওবা দ্বারাও সমস্ত পাপ মোচন করা যায়। এই কারণেই আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফে বেশি বেশি তওবার কথা বলেছেন। মহান আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, হে মানব সকল, তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তওবা কর (আল কোরআন)। অন্য এক আয়াতে মুমিনদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা তওবাকারী, শুকরগোজার, দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত, রুকু- সেজদাহ আদায়কারী, সৎকাজের আদেশকারী, মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর দেয়া সীমাসমূহের হেফাজতকারী (সূরা তওবা: ১১২)। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, তারা আল্লাহর কাছে কেন তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করে না? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু (আল মায়েদা: ৭৪)। আর এক আয়াতে আল্লাহ জাল্লা শানুহ এরশাদ করেন, যারা তওবা করেছে এবং নিজেদের অবস্থার সংশোধন করেছে এবং আল্লাহর পথকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আল্লাহর আদেশ পালনকারী হয়েছে, তারা থাকবে মুসলমানদের সাথে। বস্তুত আল্লাহ তায়ালা শিগগিরই মুমিনদেরকে বড় প্রতিদান দেবেন (সূরা নিসা: ১৪৬)। হুজুর (সা.) এর অগ্র-পশ্চাৎ সমস্ত গোনাহ আল্লাহপাক মাফ করে দিয়েছিলেন। তারপরও তিনি উম্মতের শিক্ষার জন্য প্রতিদিন সত্তর থেকে একশ বার আল্লাহর কাছে তওবা করতেন (মুসলিম)। এইজন্য আমাদেরও উচিত করোনা মহামারীর এই সময়ে বেশি বেশি তওবা-এস্তেগফার করা এবং সমস্ত উম্মতের জন্য মাগফেরাতের দোয়া করা। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)