আনোয়ার হোসেন: আগামী ১ আগষ্ট পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ। ইসলাম ধর্মালম্বিদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবের আর মাত্র ৯ দিন বাকি। করোনার কারণে না জমছে কোরবানির পশুহাট, না জমেছে ঈদ বাজার। করোনাকে উপেক্ষা করে কয়েকদিন ধরে হাট বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করেছিলো। এরই মাঝে যেমন বৃষ্টির বাগড়া তেমনই করোনা সংক্রমণ রোধে চুয়াডাঙ্গায় আবারও লকডাউন।
বেঁচে থাকলে অনেক ঈদ পাওয়া যাবে। একটি ঈদ উদযাপনে মাতামাতি না করে ভয়াবহ ছোঁয়াছে রোগ নোভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সকলকেই সতর্ক হওয়া দরকার। প্রশাসনসহ সচেতনমহল থেকে বার বার এ রকম তাগিদের পরও বাজারে বয়ষ্ক ও শিশুসহ প্রায় সবধরনের ক্রেতার ভিড় বাড়ছিলো সম্প্রতি। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়েই চলেছে। ফলে গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা জেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটি বৈঠকে মিলিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩টি ওয়াডকে রেডজোন ঘোষণা করে লকডাউন করেছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচারও করা হয়েছে। পৌরসভার যে ৩টি ওয়ার্ড লকডাউন করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ৪ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডেই জেলা শহরের বড় বাজার। ফলে বড়বাজারের পুরাতন গলি, ফেরীঘাটসহ পাশের বিপনিবিতানগুলোর দোকান পাঠ খোলা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার করে বলা হয়েছে, রেডজোন ঘোষিত এলাকা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দোকান খোলা যাবে। অন্য সব দোকানপাঠ বন্ধ রাখতে হবে।
মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কয়েকটি বিপনিবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষার বৃষ্টির মধ্যেও করোনার ভয় উপেক্ষা করে অনেকেই কেনা কাটায় ব্যস্ত। শাড়ি কাপড়ের দোকানিদের অনেকেই বলেছেন, করোনা আমাদের পুঁজি ভেঙে খেতে বাধ্য করেছে দীর্ঘদিন। সবে ঈদের কেনা কাটা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কেনাবেচা বিঘিœ হচ্ছে। এরই মাঝে শুনছি লকডাউন। জানি না আমাদের কপালে কি আছে। অভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেছেন চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার পুরাতনগলির কুকারিজ দোকানসহ প্রসাধনী বিক্রেতাদের প্রায় সকলে। তবে গতকাল জেলা শহরের বিপনিবিতানগুলোতে কেনা কাটায় ব্যস্ত কয়েকজনের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের অনেকেই বলেছেন, করোনার কারণে ঈদ হবে না? ওই ঈদ গেলো কিছুই হলো না। এলো কোরবানির ঈদ। এ ঈদেও বসে থাকবে নাকি? অপরদিকে কোরবানির ঈদকে সামনে নিয়ে ছোট বড় খামারিসহ অধিকাংশ কৃষক পরিবার ঘরে ঘরে পশু পালন করেন। গৃহপালিত এসব পশু কোরবানির হাটে বিক্রি করলে ভালো লাভ হয়। এবারের দশা ভিন্ন। করোনার কারণে কোরবানির পশু হাটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা হাতে গোনা। গ্রামে গ্রামে ঘুরে যেসব ব্যাপারীরা গরু কিনে বড় বড় শহরের উদ্দেশে নেন এবার মিলছে না তাদের দেখা। প্রশাসনের তরফে ওয়েবসাইটে পশু কেনাবেচার প্রতি গুরুত্বারোপ করলেও খামারিদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।