বেগমপুর প্রতিনিধি: এসিআই ক্রপ কেয়ার কোম্পানির মাঠকর্মীর পরামর্শে ঘাসমারা (বালাইনাশক) সুপার কেয়ার ও পে-ুলাম নামক কীটনাশক ব্যবহার করে বিপাকে পড়েছেন পাটচাষিরা। কেরুজ ডিহি ও ছয়ঘরিয়া কৃষি খামারের ৬০ বিঘা জমির পাটে এ কীটনাশক ব্যবহার করে ঘাসের সাথে সাথে সম্পূর্ণ পাট নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা পুনরায় ওই জমি চাষ করে পাট বুনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ক্ষতিপুরণ পেতে আইনি পথে হাটবেন বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে এর দায়ভার কার?
অভিযোগে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র্র ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের সিদ্দিক, জিয়ারুল, আফিরুল, শরিফুল, আশরাফুল, ডিহি গ্রামের স¤্রাট, হিজলগাড়ী বাজারপাড়ার সাইফুল আজম মিন্টু কেরুজ চিনিকলের আওতাধীন ডিহি ও ছয়ঘরিয়া কৃষি খামারের প্রায় ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পাট চাষ করেছেন। চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, হিজলগাড়ি এলাকার দায়িত্বে থাকা এসিআই ক্রুপ কেয়ার কোম্পানির মাঠকর্মী (এসপিও) পলাশের পরামর্শে আমরা পাটচাষের পরপরই কোম্পানির আগাছানাশক সুপার কেয়ার ও পে-ুলা কীটনাশক ব্যবহার করি। পাটচাষের ১০-১৫ দিন অতিবাহিত হলেও জমিতে ঘাস যেমন গজায় না তেমনই পাটের বীজও বের হয় না। যদিও এক আধটা চারা বের হয় কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেগুলোও পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি এসিআই কোম্পানীর প্রতিনিধিদের অবহিত করা হলে তারা দেখবেন বলে জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি কোম্পানির লোকজন। একবিঘা জমি লিজ নিয়ে পাটচাষ করা পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। এখন আবার পুনরায় ওই জমি চাষ করে পাট বুনছি। কোম্পানির প্রতিনিধিদের পরামর্শে আগাছানাশক সুপার কেয়ার ও পে-ুলা ব্যবহার করে আজ আমাদের এতবড় সর্বনাশ হয়ে গেলো। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। না পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে এসিআই ক্রপ কোম্পানির হিজলগাড়ী বাজার এলাকার দায়িত্বরত এসপিও পলাশ বলেন, আমি এখন হালখাতার কার্ড বিতরণে ব্যস্ত আছি। কৃষকদের সাথে কথা হয়ে গেছে। আপনার পরামর্শে কৃষকেরা এ ঘাসমারা কীটনাশক ব্যবহার করেছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না কোম্পানির লোকজন চাষিদের নিয়ে হিজলগাড়ী বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ করেই এ কীটনাশক ব্যবহারে পরামর্শ দিয়েছে। কোম্পানির জেলা সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার ইমদাদ বলেন, আমরা কৃষকদের পাটে চাষে এ কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দিইনি। পাটচাষের জন্য আলাদা কীটনাশক আছে। কৃষকেরা তাদের ইচ্ছামতো এগুলো ব্যবহার করেছে। কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি সেলিম উদ্দীন সবুজ বলেন, আমরা শুধু কোম্পানির মালামাল বিক্রি করি। কোন কৃষক কি ব্যবহার করবে এটা তার ব্যাপার। তবে এক্ষেত্রে কোম্পানির লোকজনের পরামর্শের ভুল হয়েছে বলে আমার মনে হচ্ছে। এলাকার দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, চাষিদের কেউ ক্ষতি করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।