কুষ্টিয়ায় বিধিনিষেধ চলছে ঢিলেঢালা : করোনায় আরও তিন রোগীর মৃত্যু

স্বাভাবিকভাবেই চলছে ব্যক্তিগত গাড়ি : দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা থাকলেও মানার প্রবণতা কম
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়া পৌরসভায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়। আগামী ৭দিন এ বিধিনিষেধ চলবে। তবে সকালে বিধিনিষেধ ঢিমেতালে চলতে দেখা গেছে।
এদিকে কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও তিনজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে জেলায় ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২০৫টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার ৩১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিলো ১৪ দশমিক ১ শতাংশ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৪ জন, মিরপুরে ৪ জন, কুমারখালীতে ২ জন, দৌলতপুরে ৬ জন, ভেড়ামারায় ১ জন ও খোকসা উপজেলায় ৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ হাজার ৫০০। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৭৯২ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১২৭ জন। জেলায় করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় করোনা রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে, যা মোট শনাক্তের সিংহভাগ। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের বিধিনিষেধসংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত। এ সময়ের (১২ জুন থেকে ১৮ জুন) মধ্যে পৌর এলাকায় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, দোকান ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে এই বিধিনিষেধ অনুযায়ী কাঁচাবাজার, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। বিধিনিষেধ চলা অবস্থায় কুষ্টিয়া পৌরসভা এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সরেজমিন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের মজমপুর, এনএস রোড, বড় বাজার ও হাসপাতাল মোড়, সরকারি কলেজ রোডসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এনএস রোডের দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনে দোকানের কর্মচারী ও মালিকের লোকজন বসে ও দাঁড়িয়ে আছেন। ক্রেতা এলে তারা শাটার খুলে পণ্য দিয়ে আবার বন্ধ করে রাখছেন। শহরে ইজিবাইক, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি স্বাভাবিকভাবেই চলছে। কাগজেকলমে বন্ধ থাকার কথা থাকলেও মানার প্রবণতা কম।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, রাতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এটা হয়তো কেউ কেউ জানতে পারেনি। এ জন্য কেউ কেউ হয়তো বেরিয়েছিলো। শনিবার এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচার করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে পৌরবাসী সব বিধিনিষেধ মেনে চলবে। শহরে প্রতিটি ওয়ার্ডে তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

 

Comments (0)
Add Comment