স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় কিশোরদের হাতে হাতে এখন নামীদামি ব্র্যান্ডের দ্রুতগতির মোটরসাইকেল। দলবদ্ধ হয়ে তারা দাবড়ে বেড়াচ্ছে শহরের রাস্তাঘাট, অলিগলি। এসব কিশোরের দাপটে রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলার কোনো নিশ্চয়তা নেই। প্রায়ই ঘটছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। অনেকে হতাহত হলেও থেমে নেই কিশোরদের বেপরোয়াপনা। কিশোরদের মোটরসাইকেল চালানো প্রতিরোধে প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তুলেছে ন্যাশনাল চিলড্রেনস টাস্কফোর্স (এনসিটিএফ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে কয়েকজন সদস্য সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। এ সময় জেলা প্রশাসক এনসিটিএফের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন, এ বিষয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শিশু অধিকার বাস্তবায়নকারী জাতীয় পর্যায়ের শিশু সংগঠন এনসিটিএফ লিখিতভাবে জানিয়েছে, শহরের বিভিন্ন সড়কে কিশোরদের অসতর্কতার সঙ্গে অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বাড়ছে। শহরের রাস্তায় প্রায়ই চোখে পড়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করছে, এমন কিশোরদের ২-৩জনকে একসঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া গতিতে ছুটে যেতে। কখনো বা তারা দল বেধে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে।
এনসিটিএফের লিখিত আবেদনে গত শুক্রবারের একটি ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে টানা হয়। ওই দিন শহরের একাডেমি মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। রোমান হোসেন নামের ওই কিশোর চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসা কিশোরেরাও ওই কিশোরের ঘনিষ্ঠজন ও মোটরসাইকেলচালক।
এনসিটিএফের দাবি, কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের সচেতনতা ও যথাযথ আইনি পদক্ষেপই পারে সড়কে কিশোরদের মোটরসাইকেল চালানো রোধ করতে। বৃহত্তর স্বার্থে সড়কে কিশোরদের মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে দাবি জানানোর সময় এনসিটিএফের চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি আরিকা আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ আল সাদিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিসা নাওয়াল তিতলী, চাইল্ড পার্লামেন্ট মেম্বার নাঈম বিন হাসান ও রাওনাক সামিয়া, শিশু গবেষক মুশফিকুর রহমান, সাদিয়া আফরিন, শিশু সাংবাদিক কামরুল ইসলাম অপু, জারিন তাসনিম, সাধারণ সদস্য নুসরাত ফাতেমা উপস্থিত ছিলেন।
শিশু সংগঠনের এসব সদস্য জানান, কিশোরেরা মা-বাবাকে অনেক সময় ব্ল্যাকমেইল করছে। তাদের অনৈতিক চাপে অনেক অভিভাবক একপ্রকার বাধ্য হয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক প্রিয় সন্তানের হাতে দামি ও ভারী মোটরসাইকেল তুলে দিয়ে উদ্বেগের সঙ্গে সময় পার করছেন। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা এসব কিশোরের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন প্রয়োগে শৈথিল্য দেখানোর কারণে দিন দিন তাদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। তাই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে এবং প্রশাসনকেও কঠোর অবস্থানে থেকে আইন প্রয়োগ করতে হবে।