কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা সদরে গত পরশু বৃহস্পতিবার রাতে অল্প সময়ের ব্যবধানে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন হাসপাতালে ও একজন নিজের বাড়িতে মারা গেছেন। তারা পরস্পরের পরিচিত ছিলেন। চিকিৎসকদের ধারণা, বিষাক্ত অ্যালকোহল পানের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া তিনজন হলেন কালীগঞ্জ শহরের নদীপাড়া এলাকার রিকশাচালক বিপুল দাস (৪০), একই এলাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর খাঁ (৩৮), ঢাকালে পাড়ার ট্রাকচালক রাজিব মিয়া (২৪)।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে বিপুল দাস হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। সেখানে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। একই এলাকার জাহাঙ্গীর খাঁ রাত ১০টার দিকে তার বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শরীরের মধ্যে যন্ত্রণা হচ্ছে জানালে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ১০ মিনিটের মধ্যে তিনিও মারা যান। ঢাকালে পাড়ার বাসিন্দা রাজিব মিয়া সন্ধ্যার পরে তার বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে নেয়া হয় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠান। রাত ১টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর খাঁর ফুফু রিজিয়া বেগম বলেন, তার ভাইয়ের ছেলে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। বুকে ব্যথা নিয়ে মারা যাওয়ায় তারা ধারণা করছেন, স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়েছে। শহরের ঢাকালে পাড়ার এক যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত ব্যক্তিরা সবাই কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোমিও ওষুধের দোকান থেকে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিবলী খাতুন জানান, রাজিব ও বিপুল উভয়ই অ্যালকোহল বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু বিপুল প্রকৃত তথ্য গোপন করেন, আর রাজিব সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে যশোর সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু বিপুলের পরিবার তাকে ঝিনাইদহ সদরে আর রাজিবকে যশোর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছেন এই চিকিৎসক। এ বিষয়ে কথা বলতে কালীগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রহিম মোল্লার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। সংবাদকর্মীদের তিনি জানিয়েছেন, অ্যালকোহল পানের কথা তিনিও শুনেছেন। কিন্তু পুলিশের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।