কালীগঞ্জের সুখজান বিবি সুখ খোঁজেন কাঁচা হলুদে

শিপলু জামান: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের নিশ্চিন্তপুর বনানী পাড়ার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী সুখজান বিবি (৮০) যেন হলুদেই সুখ খোঁজার চেষ্টা করে চলেছেন। জীবনের শেষ বয়সে এসেও সংগ্রামী এ নারী দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এক সময় কালীগঞ্জ শহরের হলুদ হাটে সুখজান বিবি হলুদ পরিষ্কার করার কাজ করলেও বয়সের কারণে এখন তিনি তা আর পারেন না। দুই কন্যার জননী সুখজান বিবির বড় মেয়ে বিয়ের পরই স্বামী পরিত্যাক্তা হলে মায়ের কাছে থাকতে শুরু করেন। অসহায় মা সুখজান বিবি উপার্জনের কোন উপায় না পেয়ে কালীগঞ্জ শহরের হলুদ হাটের গাড়িগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তিনি জানতেন গাড়িগুলোতে আসা কাঁচা হলুদ বিক্রয়ের জন্য নামানোর সময় কয়েক টুকরা মাটিতে পড়ে। মাটিতে পড়া কাঁচা হলুদ কেউ না নিলেও সুখজান বিবি এ হলুদগুলো সংগ্রহ করা শুরু করেন। সপ্তাহিক ২ হাটে কাঁচা হলুদ সংগ্রহ করে বাড়িতে রোদে শুকিয়ে সে হলুদ আবার এ হাটেই বিক্রয় করেন। এতে সুখজান বিবির মাসে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। যা দিয়ে তিনি নিজের প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো ক্রয় করার চেষ্টা করেন।
সুখজান বিবি প্রতিবেদককে জানান, আমি ভিক্ষা করি না। অনেক কষ্টে দিন পার করি। কাঁচা হলুদ শুকিয়ে যে টাকা পায়, তাতে আমার খাবার বা ওষুধ কোনটায় ঠিকমত কেনা সম্ভব হয় না। এ সময় তিনি ডুকরে কেঁদে উঠে বলেন, আল্লাহই আমাকে চালাচ্ছেন।
কালীগঞ্জ হলুদ হাটের হলুদ ব্যবসায়ী মুশফিকুর রহমান মাহমুদ জানান, সুখ জান বিবি হলুদ হাটে দীর্ঘদিন হলুদ পরিষ্কার করার কাজ করতেন। বয়স হয়েছে বিধায় এখন আর ওই কাজ করতে পারেন না। আমরা পরিচিতজন অনেকে তাকে মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করি। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের উচিত সুখজান বিবির মত অসহায় হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, সুখ জান বিবিকে আমরা সরকারি সকল সুযোগ সুবিধার আওতায় আনবো। খোঁজখবর নিয়ে সংগ্রামী এই নারীর প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।