গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর জালশুকা গ্রামের এক প্রবাসির স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে গাংনী থানা পুলিশ। বুধবার মধ্যরাতে গ্রামবাসী তাদের আটকে রাখার পর গতকাল সকালে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। গ্রেফতার চার জন হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নান্দবার গ্রামের কাবের আলীর ছেলে আফাঙ্গীর আলম (২৮), জহুরুল ইসলামের ছেলে আকরাম হোসেন (১৮), মিজানুর রহমানের ছেলে জামাল বাদশা (২০) ও সাইদুল ইসলামের ছেলে মিরাজুল ইসলাম (১৬)। ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়েরকারী প্রবাসীর সেই স্ত্রী এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। আজ শুক্রবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তার ডাক্তারী পরীক্ষা করিয়ে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।
সংশ্লিষ্ঠদের ভাষ্যমতে, গাংনী উপজেলার দক্ষিণের শেষ গ্রাম জালশুকা গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকায় নান্দবার গ্রামের অবস্থান। ওই প্রবাসীর স্ত্রীর বান্ধবীর স্বামী নান্দবার গ্রামের আকরাম হোসেন। স্ত্রীর বান্ধবী পরিচয়ের সূত্র ধরে দু’জনের মধ্যে মোবাইল আলাপ ছিলো। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মাঝে আলাপ চলে আসছিলো। আকরামের কাছ থেকে ওই নারীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সাথে আলাপ জমায় আফাঙ্গীর। তাদের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে স্থানীয়দের কেউ কেউ সন্দেহ করতে থাকেন। মোবাইলে আলাপের সূত্র ধরে বুধবার রাতে নান্দবার গ্রামের কিশোর মিরাজুলের পাখিভ্যানযোগে আফাঙ্গীর, আকরাম ও জামাল বাদশা জালশুকা গ্রামে পৌঁছায়। মোবাইলে গৃহবধূকে ডেকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়।
এদিকে রাতেই ভ্যানসহ চারজনকে আটক করে জেরা করে গ্রামবাসী। জেরায় বেরিয়ে আসে গৃহবধূর সাথে আফাঙ্গীরের মোবাইলে অন্তরঙ্গ আলাপ ও সম্পর্কের বিষয়টি। এতে গৃহবধূ আফাঙ্গীরের লালসার শিকার হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় গ্রামবাসীর কাছে। এক পর্যায়ে বিষয়টি পৌঁছায় পুলিশ পর্যন্ত। গাংনী থানার ওসি তদন্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রবাসির স্ত্রী ও আটক চারজনের সাথে পৃথক জেরা করেন। পুলিশের জেরায় প্রবাসির স্ত্রীর সাথে আফাঙ্গীরের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি আরও পরিস্কার হয়। আফাঙ্গীর কৌশলে বিভিন্ন প্রলোভনে ধর্ষণ করেছে বলে প্রবাসীর স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে গাংনী থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম বলেন, মোবাইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোক কিংবা অন্য কোনো কৌশলে হোক আফাঙ্গীর প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ভুক্তভোগী নারী চারজনের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯/১/৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আর্জিতে আফাঙ্গীর ধর্ষক আর ওই তিনজন তার ধর্ষণ কাজের সহযোগী। ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালেত সোপর্দ করার লক্ষ্যে থানা হেফাজতে রেখেছে পুলিশ। অপরদিকে ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য তাকেও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।