স্টাফ রিপোর্টার: নাতনির বিরুদ্ধে টাকা চুরির অপবাদ দেয়াকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের দু’পক্ষের তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম হয়েছেন ৭ জন এবং লাঠির আঘাতে আহত হয়েছে আরও দুই শিশু। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে আলডাঙ্গার গড়গড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের গড়গড়ি গ্রামের ঘোষপাড়ার বাক্কার আলীর স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৬৫), তার দুই ছেলে বাবুল হোসেন (৩৫) ও মোমিন আলী (৩০), বাবুলের স্ত্রী পিংকি খাতুন (২৪), তার দুই মেয়ে জান্নাতুল খাতুন (৯), নুজাইফা খাতুন (৫) ও ছেলে মাহফুজ (১৮ মাস), মৃত দবির আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন (৪০) ও তার ছেলে অমিত হাসান (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে বাক্কার আলীর স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের ঘর থেকে ৫ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় তার নাতনি জান্নাতুলকে দোষারোপ করা হয়। চুরির পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বাগবিত-া হয়। এক পর্যায়ে তারা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় জান্নাতুলের মা পিংকি খাতুন তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুনকে মোটা কাঠ দিয়ে মারধর করেন। পরে জান্নাতুলের পিতা বাবুল হোসেন তার ভাই মোমিন আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারেন। পরে তার ভাতিজা অমিত হাসানও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে শিশু জান্নাতুল ওরফে বর্ষার হাতে একটি কোপ লাগে। এছাড়াও জান্নাতুলের ছোট বোন হুরাইয়া খাতুন ও তার ভাই ১৮ মাস বয়সী মাহফুজ লাঠির আঘাতে আহত হয়। এতে উভয়পক্ষের নারী ও শিশুসহ ৯ জন আহত হন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা উদ্ধার করে আহতদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে, চিকিৎসা নেয়ার সময় আহত ও তাদের স্বজনরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে হাসপাতালে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা জরুরি বিভাগে পৌছে তাদেরকে শান্ত করে। এসময় পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আহতদের ব্যাতীত সবাইকে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয় পুলিশ।
গড়গড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য হাসিবুল হোসেন বলেন, শিশু নাতির বিরুদ্ধে দাদির ৫ হাজার টাকা চুরির অপবাদ ওঠে। এরই জের ধরে একই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সবাই সবাইকে মেরেছে। এতে এক শিশুসহ ৭ জন ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম হয়। এছাড়াও দুই শিশু লাঠির আঘাতে আহত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন মাথাভাঙ্গাকে বলেন, নারী-শিশুসহ ৭ জনের শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপের জখম হয়েছে। এছাড়াও দুই শিশুর শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। আহতদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি