স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৬ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আল ইমরান (২২) খুন হয়েছেন। এ ঘটনার সাত দিন পর একই উপজেলার ষাটোর্ধ্ব দম্পতি নজির উদ্দিন (৭০) ও ফরিদা খাতুনের (৬০) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুটি হত্যাকা-ের পর মামলা হলেও আল ইমরান হত্যার ঘটনায় একজন আসামিকে পুলিশ গেফতার করেছে। নজির উদ্দিন-ফরিদা খাতুন হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সবশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার জগন্নাথপুর এলাকায় রেললাইন থেকে সানারুল নামের এক কিশোরের হাত পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। গেল দুই সপ্তাহে তিন ব্যক্তি খুন ও এক কিশোরের লাশ উদ্ধারের বিষয়ে উপজেলাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আলমডাঙ্গার রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের দাবি, নজির উদ্দিন-ফরিদা খাতুন দম্পতি এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আল ইমরান হত্যার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। দুই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। পাশাপাশি কিশোর সানারুলের মৃত্যুর রহস্যও উদঘাটনের তাগিদ দেন স্থানীয় লোকজন। আল ইমরান হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গঠিত সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী বলেন, পর পর তিনটি ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর মানুষের চলাচলও কমে গেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার না করলে মানুষের আতঙ্ক কমবে না। জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান বলেন, ষাটোর্ধ্ব দম্পতি খুনের মামলার তদন্তের অনেকটাই অগ্রগতি হয়েছে। খুব শিগগিরি প্রকৃত আসামিদেরকে আটক করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার খুনের মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। এদিকে কিশোরের লাশ উদ্ধারের বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশের পোড়াদহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, কিশোর সানারুলের মৃত্যুর ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এদিকে আল ইমরান হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গঠিত সংগ্রাম কমিটি গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আল ইমরানকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার ১১ দিন পরও আসামিদের গ্রেফতার দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। এমন অবস্থায় এলাকাবাসীর মধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। সবার মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে মামলার সঠিক তদন্ত হবে না। এলাকার সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। আল ইমরান হত্যার ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর নিহত ব্যক্তির বাবা আব্দুল জলিল বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে (২৫) ওই দিনই গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে দম্পতি খুনের ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর নিহত ব্যক্তিদের একমাত্র সন্তান ডালিয়া খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।