আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় ৩দিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী মেলা ২০২৫ উদ্বোধন করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের আয়োজনে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় এ মেলা উদ্বোধন করা হয়। সোমবার উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে ‘এসো দেশ বদলাই পৃথিবী বদলাই, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে’ শ্লোগানে মেলা উদ্বোধন করেন কৃষি অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সরকার। তিনি বলেন, যেসব কৃষক ভাইয়েরা এই মেলাতে আসবেন তারা প্রত্যকে মেলায় প্রদর্শিত প্রযুক্তির ব্যবহার করে আপনাদের বাড়ির আশেপাশে যেসব জায়গা পড়ে আছে সেই জায়গা ফসলের আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেবেন, এ উদ্দেশ্যে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আপনার বাড়ির আশেপাশে যেসব জায়গা পড়ে আছে, কৃষি এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনারা ১২ মাস চাহিদামত ফসল উৎপাদন করতে পারেন। এতে করে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদিত হবে পাশাপাশি দেশ স্বাবলম্বী হবে। এসব কৃষি প্রযুক্তি কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে আমরা আমাদের চাহিদামত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হব। কৃষক ভাইদের সাথে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সবসময় পাশে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ফসল উৎপাদন থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। প্রায় ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মত উৎপাদিত ফসলের ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কমিয়ে আনতে এখানে প্রযুক্তির প্রদর্শন করা হয়েছে আপনাকে তা ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, কোন মৌসুমে অনেক সময় একই ফসল অধিক উৎপাদিত হয়, সেসব ফসলের চাহিদা কমে যায়। ১০ দিন ১৫ দিন পর্যন্ত যদি ফসল ধরে রাখা যায় তাহলে কৃষক ন্যায্য মুল্য পাবেন। এজন্য কুলিং স্টোর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে বিভিন্ন উন্নত জাতের ফল সবজি প্রদর্শন করা হয়েছে। আপনাদের উৎসাহিত করার জন্য এসব প্রদর্শিত হয়েছে। এসময় তিনি ফসল উৎপাদন সীমাবদ্ধতার মধ্যে না থেকে নিরাপদ ও পুষ্টি খাদ্য তৈরিতেও কৃষক ভাইদের প্রতি সচেতন হওয়া আহ্বান জানান।
মেলা উদ্বোধনের আগে উপজেলা কৃষি অফিস চত্বর থেকে কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী মেলার বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। র্যালি শেষে ফিতা কেটে মেলা উদ্বোধন করা হয়। এরপর মেলার বিভিন্ন স্টল প্রদর্শন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ রেহানা পারভীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশীষ কুমার বসু, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি জেলার মুখ্য সংগঠক সজিবুর রহমান, আলমডাঙ্গার ছাত্র প্রতিনিধি কামরুল হাসান কাজল, রাকিব মাহমুদ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উদয় রহমান। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ মাহমুদের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী আসিফ আল নূর তামিম, শেখ আব্দুল জব্বার, উপজেলা মডেল রিসোর্চ সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর জামাল হোসেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকছুরা জান্নাত, পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শেফালি বেগম, বিআরডিবি কর্মকর্তা সেলিম রেজা, তথ্য কর্মকর্তা ¯িœগ্ধা দাস, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আহসান উল হক, আল হেলাল উদ্দিন, খাদেমুল বাশার, মতিয়ার রহমান, রাহিমা খাতুন, নাজমুল হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, আব্দুর রফিক, আফজাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মুতি, পাপিয়া খাতুন, পাপিয়া খাতুন, শারমিন, আশরাফুল আলম, কৃষাণী শেফালী বেগম, রাবিয়া খাতুন, মেহেরুন নেছা, কৃষক রবিউল হক, আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর, মাশরুম উদ্দ্যোক্তা রাফি প্রমুখ। মেলায় ১৩টি স্টল দেয়া হয়েছে। ফসল, ফল, কৃষি যন্ত্রপাতি, মাছসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য স্টলে প্রদর্শণীর জন্য রাখা হয়েছে। আগামী বুধবার বিকেলে আলমডাঙ্গার কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শণী মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।