আলমডাঙ্গা ব্যুরো: পকেটের মাস্ক মুখ অবধি উঠছে না কিছুতেই। ফলে পকেটে মাস্ক রেখেই ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা গুণতে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশকে। শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে গত বুধবার আলমডাঙ্গা পশুহাটে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় মাস্ক ব্যবহার না করায় কয়েকজন গরুব্যবসায়িকে জরিমানা করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। জরিমানার শিকার গরুব্যবসায়ী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার তাহাজ্জত আলীর পকেটে মাস্ক ছিলো। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে মাস্ক না পরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। আদালতকে তিনি বলেন, আমার পকেটে মাস্ক আছে। পরতে ভুলে গেছি। এ অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের গরুব্যবসায়ী মিলন আলী ও কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ গ্রামের গরুব্যবসায়ী শাহজাহান আলীকেও ২ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
গত ২৩ নভেম্বর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক ব্যবহার পরিধান নিশ্চিতে শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। মাস্ক ব্যবহার না করায় ওই সময় ৮ জনকে জরিমানা করা হয়। জরিমানার শিকার ৮ জনের মধ্যে এক যুবক জানান, ‘ফাস্টফুডের দোকান থেকে বের হলাম। মাস্ক পরতে ভুলে গেছি।’ কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার পাটিকাবাড়ি গ্রামের নাজমুল হকের মুখে কোনো মাস্ক ছিলো না। ভ্রাম্যমাণ আদালত তার সামনে এলে তিনি দ্রুত পকেট থেকে বের করে মাস্ক পরেন। এ সময় আদালত তাকে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরাই ছিলো, একটু আগে খুলে ফেলেছি।’ মাস্ক না পরার অপরাধে তাকে ৫শ’ টাকা জরিমানা করা হয়। একই অপরাধে মাজিলার মহিবুল ও ফরিদপুরের সোহাগকে ৫শ করে জরিমানা করা হয়।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অনুরূপ চিত্রই দেখতে পাওয়া গেছে। প্রায় ১৪-১৫ জন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সবসময় মাস্ক সঙ্গে রাখেন। মাঝে মধ্যে ব্যবহার করেন। মাস্ক পরতে অনীহা কীসের? সে প্রশ্নেরও জুতসই জবাব মেলেনি। কেউ কেউ অবশ্য জানান, মাস্ক পরলে অস্বস্তি লাগে। তাদের মনে হয় স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না। তাই পকেটে রাখেন, কোথাও বিপদে পড়লে যেনো তাৎক্ষণিকভাবে তা পরে নিতে পারেন। বিভিন্ন স্থানে মানুষের জটলা, চায়ের দোকান, ফুটপাত এমনকি মাছ-মাংস ও বাজারেও একই চিত্র। সবাই মাস্ক ছাড়া। মাস্ক না পরার ব্যাপারে তাদের কাছে যৌক্তিক কোনো উত্তর নেই। তাদের প্রায় সবার পকেটে মাস্ক আছে। কিন্তু সবসময় পরেন না।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী বলেন, অধিকাংশ মানুষের কাছেই মাস্ক থাকে। কিন্তু তারা মাস্ক পরতে চান না। মাস্ক না পরার বিষয়ে মানুষের অস্বস্তি লাগে, ভুলে গেছি, একটু আগে পরা ছিলো এসব অজুহাত দেখায়। মাস্ক পরার অভ্যাস গড়ে উঠলে সবার উপকার হবে। তবে মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ছে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধি করা হবে। প্রশাসন আরও কঠোর হবে।