আলমডাঙ্গায় গৃহবধূ মুক্তামালা হত্যামামলা তুলে নিতে হুমকিধামকি দেয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: গৃহবধূ মুক্তামালা হত্যামামলা তুলে নিতে হুমকিধামকি দেয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হত্যাকা-ের শিকার গৃহবধূর ১১ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে বাবা মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার আব্দুর রশিদ এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়েক বছর আগে আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামের পান্টু হুজুরের আস্তানায় মেয়ে মুক্তামালাকে সাথে নিয়ে আব্দুর রশিদ চিকিৎসা হতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে মুক্তামালার সাথে ওই আস্তানায় বসবাসকারী ইছাহক আলীর ছেলে জহুরুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মুক্তামালার ১ম বিয়ের সুবাদে ১ কন্যা সন্তান থাকা সত্ত্বেও জহুরুল ইসলাম তাকে বিয়ে করে। প্রায় ৭ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বউকে নিয়ে জহুরুল পান্টু হুজুরের আস্তানায় বসবাস শুরু করেন। জহুরুল ইসলামের বাবা-মাও ওই আস্তানায় বসবাস করেন। সকলেই হুজুরের খাদেম। বিয়ের পর থেকেই মুক্তামালাকে তার শাশুড়ি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে অশান্তি ছিলো। তারা আস্তানার অভ্যুন্তরে মুক্তামালাকে নির্যাতন করতো, আটকে রাখতো। হত্যাকা-ের আগের রাতে মুক্তামালার বাবা আব্দুর রশিদ মোবাইলফোনে মেয়েকে তার বাড়ি বেড়াতে যেতে বলেন। মুক্তামালা যাওয়ার জন্য হুজুরের অনুমতি নিয়েছিলো। কথা ছিলো সকালে আস্তানার ভ্যান মুক্তামালা ও তার শিশুকন্যাকে রেখে আসবে।
তবে, সকালে নয়, দুপুরের দিকে পিতার বাড়ি আস্তানার নিজস্ব ভ্যানে মুক্তামালার লাশ পৌঁছে দেয়া হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কাউকে কিছু না বলে মাটি দিয়ে দিতে। প্রথমে আব্দুর রশিদ কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারেননি। তবে আত্মীয়দের পরামর্শে পরবর্তীতে মেয়ের লাশ নিয়ে আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হন। বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। আসামি করেন জামাই জহুরুল, জামাইয়ের মা-বাবা, ভাই ও পান্টু হুজুরকে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে পান্টু হুজুরের লোকজন মামলা তুলে নিতে নানাভাবে আব্দুর রশিদ ও তার আত্মীয়স্বজনের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, হুমকিধামকি দিচ্ছে।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহত মুক্তামালার শিশুকন্যা মিশকাতুল জানায়, ঘটনার দিন সকালে মায়ের সাথে নানাবাড়ি যাবে তাই তাকে মা মুক্তামালা খাওয়ায়ে দিচ্ছিলো। সে সময় তার মাকে পান্টু হুজুর নিজ রুমে ডাকে। মায়ের সাথে মিশকাতুলও গিয়েছিলো। হুজুর মিশকাতুলকে অন্য আরেকটি ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলো ছারপোকা মারতে। তার আনুমানিক ১৫ মিনিট পর সকলে বলাবলি শুরু করে মুক্তামালা মারা গেছে, মুক্তামালা মারা গেছে। মিশকাতুল গিয়ে মাকে ডেকেও আর সাড়া পায়নি। মায়ের আংটি পড়ে ছিলো হুজুরের চেয়ারের উপর। পরে লাশ পাঠিয়ে দিলেও শোকাতুর শিশুকন্যাকে মায়ের লাশের সাথে যেতে যেতে দেয়া হয়নি। তাকে আটকে রাখা হয়। এ বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

 

Comments (0)
Add Comment