আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের সফল অভিযানে বাপ-বেটা বাহিনীর বেটা শামিম মালিথাকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তার নিকট থেকে গুলি ও একটি দেশি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করেছে। একই সাথে ওই বাহিনীর ফেলে যাওয়া দুটি ব্যাটারি চালিত পাখিভ্যানও উদ্ধার করেছে। গত ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তিয়রবিলা গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক শামিম মালিথা (২২) আলমডাঙ্গা উপজেলার তিয়রবিলা গ্রামের সদ্য জামিনে জেলমুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাঈদ মালিথার ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা যায়, তিয়রবিলা গ্রামের আলাল মালিথার ছেলে সাঈদ মালিথা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। গত ২০২০ সালে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ তাকে অস্ত্রসহ আটক করে। সে সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়। সেই মামলায় তিনি জেলে ছিলেন। গত কয়েক মাস পূর্বে জামিনে জেলমুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন।
এলাকায় অভিযোগ ওঠে সাঈদ মালিথা বাড়ি ফিরে নিজের ছেলে শামিম মালিথাকে সাথে নিয়ে গ্যাং গ্রুপ সৃষ্টি করেন। এলাকার অনেকেই এ গ্যাং গ্রুপেকে বাপ-বেটা বাহিনী বলে মন্তব্য করতেন। এ গ্রুপে এলাকার ৮/১০ যুবক জড়িত বলেও জানা যায়। চাঁদাবাজিও নানা সন্ত্রাসীমূলক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে পুলিশ তাদের আটক করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাপ-বেটা বাহিনী পার্শ্ববর্তী রায়সা গ্রামের সিতাবিতা বিলের দুই মাছ খামারে গিয়ে চড়াও হয়। এক খামারে ২ লাখ ও অন্য একটি খামারে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এর পূর্বে রামদিয়া বাওড়ে গিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে। নৈশ্যপ্রহরীদের মারধর করে। এ সংবাদ জেনে যায় পুলিশ। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে তিয়রবিলা ফাঁড়ি পুলিশে এসআই সুকান্ত, আলমডাঙ্গা থানার এসআই কাজী সামসুল আলম সর্ঙ্গীয় অফিসার ফোর্স নিয়ে অভিযান শুরু করে। অভিযানের এক পর্যায়ে নিজ গ্রাম থেকেই আটক করে গ্যাং গ্রুপের শীর্ষ নেতার ছেলে শামিম মালিথাকে। এ সময় তার নিকট থেকে গুলি ও একটি দেশি ওয়ান শুটার গান উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাহিনীর অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের ব্যবহৃত দুটি পাখিভ্যান উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, আটক শামিম মালিথার বাবা সাঈদ মালিথা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তিনি সম্প্রতি জেলমুক্ত হয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন। সাঈদ মালিথা নিজের ছেলে শামিম মালিথাকে সাথে নিয়ে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে চাঁদাবাজি করছেন। গোপনসূত্রে এমন তথ্য পেয়ে আমরা কয়েক দিন ধরে বাবা-ছেলেকে হাতেনাতে আটকের চেষ্টা করছিলাম। বৃহস্পতিবার রাতে নিজ গ্রাম থেকে শামিম মালিথাকে আগ্নেয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। তবে, অভিযানকালে সাঈদ মালিথাসহ আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। সাঈদ মালিথার নামে খুন, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান। শীর্ষ সন্ত্রাসী সাঈদসহ অন্যান্যদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শামিম মালিথাকে অস্ত্র মামলায় আদালতের মাধ্যমে সোপর্দ করা হয়েছে।