স্টাফ রিপোর্টার: টানা ৯ দিন বন্ধ থাকার পর কুষ্টিয়ায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের সেচ ব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়েছে। প্রকল্পের ইনটেক চ্যানেলে পানির স্তর ঠিক হওয়ার পর গতকাল দুপুরের পর পুরোদমে দুটি সেচ পাম্প চালু করা সম্ভব হয়। এতে কুষ্টিয়াসহ তিন জেলার বোরো চাষিরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। এর আগে পদ্মা নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় দেশের অন্যতম বৃহৎ গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের পাম্প। এতে হুমকির মুখে পড়ে প্রকল্প এলাকার প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান।
জিকে সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, গত শুক্রবার থেকে পদ্মায় পানি প্রবাহ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাব পড়ে জিকে প্রকল্পের ইনটেক চ্যানেলে। ওই দিনই প্রকল্পের সেচ পাম্প দুটি চালু করা হলেও ইনটেক চ্যানেলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় মাত্র ১০ ভাগ পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছিল। পরে গতকাল দুপুরের পর চ্যানেলে পর্যাপ্ত পানি আসায় সেচ পাম্প দুটি পুরোদমে চালু করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, সেচ পাম্প চালু রাখতে হলে পদ্মা নদীর সঙ্গে যুক্ত ইনটেক চ্যানেলে ন্যূনতম পানির স্তর ৪.৫ মিটার থাকা দরকার। মিজানুর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে উজানের দেশ ভারত গঙ্গা নদীর পানি ফারাক্কা ব্যারাজে আটকে দেয়। গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী ভারত প্রথম ১০ দিন পানি প্রত্যাহার করে। পরের ১০ দিন তারা বাংলাদেশে পানি সরবরাহ করে। সেই অনুযায়ী ভারত তাদের ভাগের পানি প্রত্যাহারের পর গত ৩১ মার্চ বাংলাদশের ভাগের পানি ছাড়ে। চলতি বছরের ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি সেচ সুবিধা দিতে জিকে সেচ প্রকল্পের দুটি পাম্প চালু করা হয়। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের কৃষকদের এই সুবিধা দেয়ার কথা ছিলো। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার কৃষকদের স্বল্প খরচে সেচ সুবিধা দিতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১ কিলোমিটার ভাটিতে দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ চালু হয় ১৯৬৯ সালে। প্রথম পর্যায়ে চার জেলার ১৩ উপজেলার ৪ লাখ ৮৮ হাজার হেক্টর জমি প্রকল্পের আওতাধীন ছিলো। তবে প্রকল্পের পানির উৎস পদ্মা নদীতে দিন দিন পানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রকল্পটি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।