অপার সম্ভবনার চুয়াডাঙ্গাকে পরিকল্পিতভাবে স্মার্ট জেলায় উন্নীত করা সম্ভব

স্মার্ট ডিস্ট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে করণীয় শীর্ষক মতমিনিময় সভায় অভিমত

স্টাফ রিপোর্টার: স্মার্ট ডিস্ট্রিক্ট ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে করণীয় শীর্ষক মতমিনিময় সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, অপার সম্ভাবনার জেলা চুয়াডাঙ্গা। এ জেলাকে দেশের স্মার্ট জেলায় উন্নীত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

পরিকল্পনা মাফিক কর্মসূচি হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলাকে স্মার্ট জেলায় উন্নীত করার লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা প্রয়োজন। সমাজের সর্বস্তরের উদ্যোক্তাসহ যে কোনো সচেতন ব্যক্তিই স্মার্ট জেলায় উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রস্তাব দিতে পারেন। প্রস্তাবিত স্মার্ট প্রকল্প নির্বাচিত হলে প্রকল্প শুরুর জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১ কোটি টাকার সহযোগিতা দেবে সরকার। যাকে সিড মানি বলা হচ্ছে। প্রস্তাবনাকারীও থাকবেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মসূচিতে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান এসব তথ্য জানিয়ে আরও বলেন, আরও কয়েকটি মতবিনিময় সভার মাধ্যমে কয়েকটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা প্রণয়ন করে তা মে মাসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন-২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে সর্বস্তরে সর্ব সাধারণ নাগরিকের সুবিধা হাতের নাগালে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। ইতোমধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশ পূর্ণতা পেয়েছে।

মতবিনিময়ের শুরুতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) কবীর হোসেন স্বাগত বক্তব্যসহ সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া উপস্থাপন করেন স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা। প্রথমে এক বা একাধিক গ্রাম প্রকল্পভুক্ত করে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্মার্ট গ্রাম হিসেবে পূর্ণতা কীভাবে দেয়া সম্ভব সে লক্ষ্যে স্মার্ট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। সহকারী কমিশনার আইসিটি ও প্রকল্প পরিচালক স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা করতে হলে কী কী করণীয় তার অংশবিশেষ উপস্থাপন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়ার লক্ষ্যে আইন শৃঙ্খলা কীভাবে শতভাগ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব তারও বর্ণনা দিয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে কীভাবে অপরাধ প্রবণতা শূন্যের কোঠায় নেয়া সম্ভব তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তিনি সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দেশের প্রতি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামীদ রেজাসহ জেলার প্রায় প্রতিটি সরকারি দফতরের প্রধানদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক লিটন, সাংবাদিক হুসাইন মালিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে কৃষি উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি, শিক্ষার মান বৃদ্ধি, শহর যানজটমুক্ত করণে বিদ্যালয়গুলোর সামনে ওভারপাস এবং শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে দৃষ্টি নন্দন ফোটক নির্মাণসহ শহরের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা প্রসঙ্গ। জেলা প্রশাসক বলেন, সুফলা চুয়াডাঙ্গাকে শতভাগ স্বনির্ভরতা অর্জনে বাস্তবমুখী পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্লাক বেঙ্গল গট পালনসহ তার গোস্ত প্রসেস করে রপ্তানিরও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্য সেবার মানবৃদ্ধিসহ যেখানে যা করনীয় তার সবই সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে করার পাশাপাশি সর্বক্ষেত্রে সেবাদানে স্মার্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নিদের্শনা রয়েছে।

এ মতবিনিময় সভা ছাড়াও গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

Comments (0)
Add Comment