স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভালাইপুর মোড় থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া সড়কের চারটি পয়েন্টে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি চারটি কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। চারটির মধ্যে তিনটি কালভার্ট নির্মাণ কাজে বিলম্ব হওয়ায় অপরিকল্পিত বাইপাস দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। বৃষ্টির দিনগুলোতে মাঝে মাঝে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ওই পথে চলাচলকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালাইপুর মোড় থেকে হাটবোয়ালিয়া অভিমুখী সড়কের কয়রাডাঙ্গায় একটি সেতু এবং চিৎলা, আইন্দিপুর, বড় গাংনী ও খোরদে চারটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে এলজিইডি। সেতুর কাজটি এখনও পিলার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে কয়রাডাঙ্গায় বর্তমান সড়ক দিয়েই চলাচলের সুযোগ থাকায় এ পথে চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীদের তেমন অসুবিধা হচ্ছে না। তবে, চারটি জায়গার মধ্যে খোরদ ছাড়া তিনটি স্থানেই কালভার্ট তৈরির কাজ আংশিক অবস্থায় আছে। গত রোববার পরিদর্শনকালে পথচারী এবং এই পথে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, আলমসাধু, নসিমন, করিমন, পাখিভ্যান চালক ও মোটরসাইকেল আরোহীদের অবর্ণনীয় কষ্ট পোয়াতে দেখা যায়।
সরজমিনে দেখা গেছে, চিৎলা গ্রামে কালভার্টের নির্মাণকাজ মাত্র ৩০ শতাংশ হয়েছে। সেখানে একজন নির্মাণ শ্রমিককে তার দিয়ে রড বাঁধতে দেখা যায়। ঢালাই অংশের বাইরে যতটুকু রড বেরিয়ে আছে তা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। এতোবড় কালভার্টে এমন চিকন এবং ফাঁকা ফাঁকা করে রড দেয়ায় কালভার্টটির স্থায়িত্ব নিয়ে আশংকা রয়েছে। এই কালভার্টের পাশে তৈরি বাইপাস দিয়ে বেশ ঝুঁকি নিয়ে বাস, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলতে দেখা যায়। এখানে এক পর্যায়ে কাভার্ডভ্যান উল্টে যাওয়ারও উপক্রম হয়।
আইন্দিপুর বাইপাসটিতে ইটের পরিমাণ কম হওয়ায় তা ভেদ করে কাদামাটি বেরিয়ে এসেছে। সেখানে পল্লী বিদ্যুতের উপকরণবাহী একটি গাড়িকে আটকে পড়তে দেখা যায়। এ সময় যাত্রীবাহী বাসের যাত্রী এবং একটি কাভার্ডভ্যানের হেলপার ও আশপাশের লোকজন এসে তা ধাক্কা দিয়ে ডাঙ্গায় তোলে। বাসটি ডাঙ্গায় তুলতে চালক ও সহকারীকে অনেক দুর্ভোগ পোয়াতে হয়।
বড়গাংনীতে কালভার্টের টপছাদ রাস্তা ছাড়াও অনেক নিচে হওয়ায় এলাকাবাসীরা হতবাক হয়েছেন। সেখানে কোনো নির্মাণ শ্রমিককে পাওয়া যায়নি। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, ঠিকাদার তাদেরকে জানিয়েছেন, রাস্তা কেটে সেতুর সমান করা হবে। ঠিকাদারের এমন মন্তব্যে হতাশও হয়েছেন অনেকেই। এই কালভার্টের পাশে বাইপাসটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। বাইপাসের মাঝখান কাদাপানিতে তলিয়ে থাকায় মোটরসাইকেলসহ চলাচলকারী যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ভোগে পড়ছেন।
মোচাইনগর গ্রামের বাসিন্দা সোহেল রানা এই প্রতিনিধিকে জানান, একই সময়ে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হলেও খোরদ ছাড়া তিনটি কালভার্ট নির্মাণ আংশিক হয়েছে। বৃষ্টির দিনগুলোতে এই পথের যাত্রীদেরকে বিকল্প পথে রুইথনপুর গ্রামের মধ্যদিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে দূরত্ব, সময় ও আর্থিকভাবে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আতিয়ার রহমান নামের একজন বাসচালক বলেন, ‘কালভার্ট পুরোপুরি নির্মাণ না হওয়ায় এবং বাইপাস নিয়ে ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনায় বর্ষার দিনগুলোতে জীবন হাতে করে বাস চালাতে হচ্ছে। অবিলম্বে কালভার্ট নির্মাণকরে সড়ক সচল করা প্রয়োজন।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. আবুল কালাম, অবিলম্বে কালভার্টগুলো নির্মাণের জন্য ঠিকাদার ও এলজিইডিকে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যতদিন কালভার্ট নির্মাণ শেষ না হচ্ছে, ততদিন বাইপাসগুলোকে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হোক।’