আজ ২৪ রমজান। রহমত ও মাগফেরাতের দশক শেষে আমরা উপনীত হয়েছি নাজাতের দশকে। রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। এই মাসে বেশি বেশি দোয়া করা দরকার যাতে আল্লাহতায়ালা মেহেরবাণী করে আমাদেরকে দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত দান করেন। হাদিসে এই মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করার কথা বলা হয়েছে। তা হলো কলেমা শরিফ পড়া, এস্তেগফার, জান্নাত প্রাপ্তির জন্য দোয়া এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের দোয়া। পূণ্যময় মাসে আল্লাহপাক বান্দাদের মাফ করে থাকেন এবং দোয়া কবুল করেন। রমজানে এই দোয়া আমরা বেশি বেশি করতে পারি; লা ইলাহা ইল্লাল্লহ, আসতাগফিরুল্লহ, নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া না’উযুবিকা মিনান্নার। অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। হে আল্লাহ, আপনার কাছে আমরা মাগফেরাত ও জান্নাত চাচ্ছি এবং জাহান্নামের আগুন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আরও একটি দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে। তা হল, ইয়া ওয়াছি’আল ফাদলি, ইগফিরলী। অর্থ, হে প্রশস্ত রহমতের মালিক, আমাকে মাফ করে দাও। রমজান মাসে সব সময়ই দোয়া কবুল হয়, তবে দোয়া কবুলের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্ত । এক হাদিসে রাসুলে কারীম (সা.) এরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ব্যর্থ হয় না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায় বিচারক বাদশাহের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া (আহমদ)। কিন্তু ইফতারের সময় আমরা এমন ভাবে খাওয়াতে ঝাঁপায়ে পড়ি যে খোদ ইফতারের দোয়াও ভুলে যায়। ইফতারের প্রসিদ্ধ দোয়া হল, আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আ’লা রিযকিকা আফতারতু। অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি আপনার জন্যই রোযা রেখেছি, আপনার প্রতিই ঈমান এনেছি, আপনার উপরই ভরসা করেছি এবং আপনার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। রমজানের প্রতি দিবারাতে জাহান্নামের কয়েদীদেরকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতি দিবারাতে মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয় (তারগীব)। তাই আসুন, নাজাতের এই দশকে আমরা সবাই মিলে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে মাফ চায় যাতে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)