পথে প্রান্তরে দাঁড়িয়ে নদীর সাথে ফোনালাপে নতুন পুরাতন প্যাচাল
পাহাড়ের চূড়ায় চড়া গেলেও সুচের মাথায় বসা যায় না
-ভোলাইনাথ পটল-
এইতো সেদিন কে যেনো বলছিলেন, উন্নয়নের তালিকায় চুয়াডাঙ্গা ৬৩/৬৪ নম্বরে। মেহেরপুরও অনেকটা তেমনই ছিলো। একজন প্রতিমন্ত্রী পেয়ে মেহেরপুরের কপাল খুলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহের মাঝে কোন এক স্থানে বিমানবন্দর করা যায় কি নাও ভেবে দেখা হচ্ছে। যদিও এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অনেকটাই অসম্ভব। কারণ বিমান বন্দরের জন্য যে পরিমানের জমি প্রয়োজন তা এলাকায় জুটবে না। প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা, যে জমিতে একাধীক ফসল হয় সেখানে স্থাপনা গড়ে তোলা চলবে না। বৃহত্তর কুষ্টিয়ার জমি সুফলা। ফলে চাষাবাদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কিছু করা যায় কিনা সেটাই ভেবে দেখতে হবে। বিলম্বে হলেও চুয়াডাঙ্গায় বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়েছে। পূর্ণতা পেলে অনেকেরই বেরাকত্ব ঘুচবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ডিঙ্গেদ বাজারের অদূরে মানিকদিহি নামক স্থানে গড়ে তোলা বিসিক শিল্প নগরীর একটি প্লটে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম কিছু একটা করতে পারলে ভাল হতো। কী করা যায় ভাবতেই মনে হলো সর্বজ্ঞানে গুণান্বিত নারী নদীকেই ফোন করি। ফোন তুলেই নদী বললো, তোমাকেই ভাবছিলাম। শুধু কথা বলতে পারলে নিজ গৃহে পরবাসি হয়ে থাকার অসহ্য কষ্ট কিছটা হলেও মোছে। যাক, মনের কথা বুঝে ফোন করার জন্য ধন্যবাদ। বলালম, বাজারে যেভাবে দ্রব্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে তাতে তোমার শুকনো ধন্যবাদই বোধ হয় স্বস্তা। ওতে তো চিড়ে ভিজবে না। ভোজনের – রসনা বিলাসের কথা বলো। নদী বললো, তোমার সেই খাই খাই ভাবটা এখনো গেলো না। বললাম, ঠিকই বলেছো। তোমার কাছে এলেই পুর্ণেন্দুর সেই বিখ্যাত পক্তির কথা মনে পড়ে যায়। সত্যিই খুধার্ত আমি। আকাশের নখত্রগুলোকে চিনে বাদামের মত টুক টাক করে, আর গঙ্গা? সেতো এক গ্লাস সরবত।
– থাক থাক। মিথ্যুক! মজা নেয়ার জন্য এখনই তো ডাকাত হতে চায়বা। ওসব রাখো। পবিত্র মাসে কথা বার্তায়ও সংযোমী হওয়া উচিৎ। এমনিতেই খাঁ খাঁ রোদ।
= হিম! রোদেই তো দাঁড়িয়ে। বিসিক শিল্প নগরীতে। আসবে নাকি? এখানে পানি সংরক্ষণের জন্য সানবাধানো পুকুরও আছে। এসো সাঁতার কাটি। ধুয়ে যাবে শরীরের অবর্জনা। মুছে যাবে মনের ময়লা। গ্লানি।
– বৈশাখের গান এখনও হৃদয়ে বাঝছে দেখছি। বলো, ফোন করলে কেনো? শুধু কি খোশগল্প- নাকি?
= না, মানে বিএনপি সম্পর্কে যদি কিছু বলো। অনেকদিন পর মনে হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা বিএনপি নেড়ে চড়ে বসেছে। ৩১ জনের আহ্বায়ক কমিটিতেও নাকি ভাগাভাগি হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির লক্ষে তৃণমূল সাজানো হচ্ছে। শুনছি আরও অনেক কিছু।
– চা দোকানে অনেক কথাই শোনা যায়। দেখো শিগিরিই পট-পাল্টাবে। ভাই এমপি হবে, তখন দেখে নেবো। তোমার ভাই এমপি হলে আমার ভাই মন্ত্রী হবে। দেখবো তুমি কী করো। নতুন পুরাতন কর্মীদের মধ্যে এরকম উক্তি আওড়ালে নেতারাই বা কি করবে।
= তুমি তো দেখছি অনেক কিছুই জানো। সত্যি সেরকম সম্ভবনা আছে নাকি? থাকলে বলো, আগে ভাগে লেজ ধরি, তৈলমৈথুন শুরু করি।
– দিল্লী বহুদূর। চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্ত্বরে বক্তব্য দিতে গিয়ে একদিন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর (অব.) বজলুল হুদা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিন আমার হাতের তালুতে লোম গজাবে। বুঝেঝো?
= বুঝলাম।
– কি বুঝলে?
= বুঝলাম দম্ভো ভাল না। কে কবে কি হবে তা এখন হুংকার দিয়ে সুবিধা নেয়ার রোগ ভয়ানক।
-থাক ওসব কথা। মেহেরপুরের খবর বল।
= অরুণের তরুণ প্রীতিতে তার অবস্থান অনেকটা ধরে রাখলেও দীর্ঘদিন স্থায়ী দীর্ঘশ^াসে সমর্থকের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে?
– তুমিই খোজ নাও। হালচিত্র খুব একটা সুখকর নয়। ক্ষমতার কাঠি যখন যার হাতে তখন …
= ঠিক। পারদর্শি যাদুকর তখন তিনিই। মেহেরপুর সত্যিই দৃষ্টান্ত।
-তুমিও তো দেখছি খুঁচা শিখে গেছো। সাবধান! সুঁচ নিয়ে খেলো না। পাহাড়ে উঠতে চাইলে ওঠো।
= বুঝলাম না।
-কোন দিন কোনটাই বা তুমি সহজে বুঝলে? পাহাড়ের চুঁড়ায় উঠে নির্বঘেœ নিশ্চিন্তে বসা যায়, সুঁচের আগায় বসলে কি হয়?
= আচ্ছা বাবা। আর কারও লেজ ধরার কথা বলছি না। আজ আবারও বলছি, তোমার কথার বাইরে আমি আর কিছু বলতে যাবো না। কথা বললেই যখন দোষ, তখন কথা বাড়িয়ে কি হবে?
-হ্যা, সেই সুবধ বালকের মত থাকো। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পর্কে কিছু জানো?
= জানলেও তো কিছু বলবো না। শুধু জানি স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনেকদূর এগিয়েছে। দিল্লিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি ফিরলেই দিনক্ষণ নির্ধারণ হবে।
-ঠিকই শুনেছো। ভাবলেও অবাক হতে হয়, ঘাড় দিয়ে শরীরের বিশেষ যন্ত্র শরীরে প্রবেশ করিয়ে যেখানে সমস্যা সেখানে স্থাপন করে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে। তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। জুসও খেয়েছেন।
= ওই যন্ত্রটা স্থাপন করা হয়েছে নাকি পাকস্থলিতে।
-ঠিক। তোমার কাছেও তো দেখছি অনেক তথ্য। দেশে ফিরতে খুব একটা দেরি হবে না।
=এদিকে অনেকেই সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছেন।
-তা ঠিক। আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না।ফোন রাখো। পরে সুযোগ মতো রিং দিও।
=ওকে বাই। ভালথেকো।