মেহেরপুর অফিস: পরপর কয়েক বছর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, অনুকুল আবহাওয়া ও ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর মেহেরপুর জেলার কৃষকরা গম চাষে ঝুঁকছেন। গত কয়েক বছর মেহেরপুরে ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে কৃষি বিভাগ নিরুৎসাহিত করায় গম চাষের পরিবর্তে ভূট্টা, মসুরি, তামাক ও অন্যান্য ফসল চাষ করেছিলেন জেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে, চলতি মরসুমে জেলায় ৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। গত বছরে চাষ হয়েছিলো ২ হাজার ৯৯৫ হেক্টরে। এ বছরে গম চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। গাংনী উপজেলার ধর্মচাকী গ্রামের কৃষক ফজলুল হক জানান, গত বছর তিনি ৬৬ শতক জমিতে গম চাষ করেছিলেন। ফলন পেয়েছিলেন ৩০ মণ। এ বছরে একই পরিমাণ জমিতে গম চাষ করেছেন তিনি। আশা করছেন আগের চেয়ে ফলন ভালো পাবেন। একই গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, গত বছর তিনি ৫০ শতক জমিতে গম চাষ করে ফলন পেয়েছিলেন ২২ মণ। এ বছর ১ একর জমিতে গম চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো রয়েছে। তাই এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। ধর্মচাকী গ্রামের ইউপি সদস্য বশির আহমদে জানান, ব্লাস্ট রোগের কারণে কৃষি অফিস গতবার গম চাষে নিরুৎসাহিত করেছিলো। তার পরও তিনি ৪ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছিলেন। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর ২ একর জমিতে গম চাষ করেছেন। গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের ইউপি সদস্য শাবান আলী জানান, এবার তিনি উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি গম ৩৩ চাষ করেছেন। গমচাষের শুরু থেকেই ব্লাস্ট নামের ছত্রাক জনিত রোগটির বিষয়ে এবার যথেষ্ট সজাগ আছেন তারা। তাই সময়মত জমির পরিচর্যা করাসহ ব্লাস্ট ছত্রাক থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করবেন। মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালি গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, চলতি মরসুমে কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমিতে বারি ৩৩ জাতের গম চাষ করেছেন। মাঠে ফসলের অবস্থা ভালো। এ বছর জমিতে একর প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ মণ গম পাওয়ার আশা করছেন। মেহেরপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার বলেন, গতবার জেলার কিছু কিছু ক্ষেত ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় গমের দানা পরিপূর্ণ না হয়ে চিটা দেখা দিয়েছিলো। গত বছর জেলায় মাত্র ১৫ হেক্টর জমিতে এ রোগ দেখা দিয়েছিলো। এ কারণে এবার জেলায় বারি-৩৩ জাতের গম চাষের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ক্ষেতগুলোতে এ রোগের আক্রমণের আশঙ্কা থাকায় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের গম চাষে প্রথম থেকেই পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।