অনলাইন ডেস্ক: নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতে ছয় জনের প্রাণহানী ও তিনজন আহত হয়েছেন। শনিবার সকালে জেলা দুটির তিনটি উপজেলায় আঘাত হানা বজ্রপাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনার মদনে বজ্রপাতে ইয়াহিয়া (২৫) নামে এক যুবক ও রায়হান (৯) নামের এক শিশুর। এ সময় আহত হয়েছে আরো ৩ জন। শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোবিন্দশ্রী বিজ্জয়াইল হাওরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত ইয়াহিয়া মদন উপজেলা গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বারগরিয়া গ্রামের (রাজালীকান্দা পশ্চিম পাড়ার) মন্জুরুল হকের ছেলে এবং নিহত রায়হান একই গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। এ সময় বজ্রপাতে আহত টিপন (২৭), ইসলাম (২২) ও দূর্জয়কে (৯) মদন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, চলমান করোনা প্রাদূর্ভাবে বোরো ফসল কাটতে শ্রমিক সংকট থাকায় শনিবার সকালে গোবিন্দশ্রী গ্রামের বিজ্জয়াইল হাওরে ধান কাটতে যায় ইয়াহিয়াসহ অন্যরা। সকালের খাবারের সময় হলে বাবা সেলিমের জন্য ভাত নিয়ে হাওরে যায় শিশু রায়হান। তখনই আঘাত হানা বজ্রপাতে ইয়াহিয়া, রায়হান, টিপন, ইসলাম, দূর্জয় আহত হলে লোকজন তাদের উদ্ধার করে মদন হাসপাতালে নিয়ে আসে। মদন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমি আক্তার ইয়াহিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশু রায়হান ঘটনাস্থলেই মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন তার বাবা সেলিম মিয়া।
মদন থানার ওসি মো. রমিজুল হক জানান, শনিবার সকালে গোবিন্দশ্রী হাওরে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে শুনেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
এদিকে, সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা, দিরাই ও জগন্নাথপুর উপজেলাত পৃথক বজ্রপাতে এক যুবকসহ ৩ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন- শাল্লা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে শংকর দাস (২২) নামের এক যুবক, দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নে তাপস মিয়া (৩০) নামে এক কৃষক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ফরিদ মিয়া (৩৫) এবং জগন্নাথপুর উপজেলার হলদিপুর ইউনিয়নে মোঃ শিপন মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষক।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে নারায়ণপুর গ্রামের শংকর দাস বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী সাসখাই বাজারে যাওয়ার সময় রাস্তায় বজ্রপাতে তিনি মারা যান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় জেলার দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের হাওর ধান কাটার সময় তাপস মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সে পার্শ্ববর্তী হরিগঞ্জ জেলার আজমীরিগঞ্জ উপজেলার জলসুকা গ্রামের মোঃ মফিজ উল্ল্যাহর ছেলে।
এছাড়া প্রায় একই সময় জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার হলদিপুর ইউনিয়নের নলুয়ার হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মোঃ শিপন মিয়া নিহত হন। তিনি ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের মৃত তবারক উল্ল্যার ছেলে বলে জানা যায়।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন ফরিদ মিয়া।