স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার যদুপুর-পারঘাটা গ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামীকে ব্যাঙ্গ করায় স্ত্রী সালেহা খাতুনকে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। এতে অভিমানে মেয়ে ছুমাইয়া খাতুন বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ৮টা ছুমাইয়া খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। আহত ছুমাইয়া খাতুন (১৬) সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের যদুপুর-পারঘাটা গ্রামের মোহর আলীর মেয়ে।
অপর দিকে ছুমাইয়া খাতুনের শয্যাপাশে থাকা সালেহা খাতুন সংবাদকর্মীদের নিকট জানায় যৌতুকের দাবিতে প্রতিনিয়ত আমার স্বামী আমাকে এবং আমার মেয়েকে মারধর করে। এ নিয়ে গতকাল সকালেও মারধর করেছে আমার এবং মেয়েকে। এই জন্য আমার মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তবে এলাকাবাসি এবং পুলিশ সূত্রে যৌতুকের দাবিতে এ ঘটনা ঘটেনি। স্বামীকে ব্যাঙ্গ করায় স্ত্রীকে মারধর করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়াও সালেহা খাতুন এবং তার স্বজনেরা সংবাদকর্মীদের সাথে অসাদাচরনের অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ২২ বছর আগে মোহর আলীর সাথে সালেহা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। মোহর আলীর একটি পা ছোট থেকে অক্ষম। তাই কোন কিছু হলেই পা নিয়ে (খোড়া) বলে খোটা দেন তার স্ত্রী। বারবার নিষেধের পরও তার স্ত্রী ব্যাঙ্গ করে মাঝেমধ্যেই ডাকে। এতে মোহর আলী রাগান্তিত হয়ে তার স্ত্রীকে মারধর করতো। গতকাল সকালে মোহর আলী তার স্ত্রী সালেহা খাতুনকে খাবার দিতে বলেন। এ সময় তার স্ত্রী খাবার না দিয়ে নিজে নিজে বেড়ে খাওয়ার জন্য বলে। এতে মোহর আলীর সাথে তার স্ত্রীর কথাকাটি হয়। এ সময় তার স্ত্রী মোহর আলীকে আবারো ব্যাঙ্গ করতে থাকে। এতেই ক্ষিপ্ত হতে স্ত্রী সালেহা খাতুনকে সামান্য মারধর করেন মোহর আলী।
তারা আরও বলেন, মা-বাবার প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা দেখে মান অভিমানে মেয়ে ছুমাইয়া খাতুন ঘরে থাকা কীটনাশক পান করে। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা দর্শনার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়। অবস্থার অবনতি হলে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে।
বেগমপুর পুলিশ ক্যম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসএই) আসলাম পারভেজ বলেন, রাতেই মোহর আলীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। যৌতুকের দাবিতে কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। মূলত মোহর আলীর একটি পা অক্ষত। এ নিয়ে তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই খোটা দিতো। গতকাল সকালে খাবার চাওয়া স্বামীকে বেড়ে খেতে বলেন। এতে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলে তার স্ত্রী আবারো তাকে ব্যাঙ্গ করে ডাকে। এতে মোহর আলী তার স্ত্রীকে মারধর করে। এই অভিমানে তার মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, পরিবারের নিকট থেকে জেনেছি বিষপান করেছে মেয়েটি। তার পাকস্থলি ওয়াশ করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।