ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা গত বছরের ন্যায় এবারও পাট বীজ উৎপাদনকারী পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সবার উপরে অবস্থান করছে। ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে পাট চাষ করেন কৃষকরা। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৫৪০ কেজি, শৈলকুপায় ৫ হাজার ২০০ কেজি, কালীগঞ্জে ৮ হাজার ৫০ কেজি, কোটচাঁদপুরে ৭ হাজার ৮৫০ কেজি, মহেশপুরে ৭ হাজার ৭৫০ কেজি পাট বীজ উৎপাদন হয় এ বছরে। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫ একর জমিতে ৭৫ জন কৃষকের উৎপাদিত পাট বীজের পরিমাণ ৮ হাজার ৫০ কেজি। যা অন্যান্য উপজেলা থেকে বেশি হওয়ায় পাট বীজ উৎপাদনে জেলার সেরা উপজেলা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।
উপজেলা পাট অধিদপ্তর থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উপজেলার পাট চাষিরা সরকারের বিনামূল্যে দেয়া বীজ (বিজেআরআই-৮) ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিজ নিজ জমিতে রোপণ করেন। তালিকাভুক্ত পাট বীজ উৎপাদনকারী প্রত্যেক কৃষক ১০ শতাংশ জমির জন্য ২৫০ গ্রাম হারে বীজ পাওয়ার পাশাপাশি ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৩ কেজি টিএসপি, ৮০০ গ্রাম এমওপি, ৪ কেজি জিপ সার এবং ১ বোতল কীটনাশক সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেয়েছিলেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে কৃষক তার রোপিত পাট গাছ থেকে বীজ কর্তন করেন। উপজেলা পাট অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ৭৫ জন বীজ উৎপাদনকারী কৃষকের মধ্যে ৪২ জন কৃষকের নিকট থেকে কেজি প্রতি ২২০ টাকা হিসেবে ৪ হাজার কেজি বীজ ক্রয় করে উপজেলা পাট অধিদপ্তর। উক্ত কার্যালয়ের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট থেকে কেনা পাট বীজ পরবর্তীতে পাট চাষের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়।
উপজেলার বেথুলি গ্রামে পাট বীজ উৎপাদনকারী কৃষক রবিউল ইসলাম প্রতিবেদককে জানান, আমি গত বছর আমার এক বিঘা জমিতে পাট বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ রোপণ করেছিলাম। তাতে আমার মোট খরচ হয় ৭ হাজার টাকা। ১ বিঘা জমিতে আমি আল্লাহর রহমতে ২০০ কেজি বীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। সম্পূর্ণ বীজ আমি উপজেলা পাট অফিস বিক্রি করেছি ৪৪ হাজার টাকায়।
ঝিনাইদহ জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা কে এম আব্দুল বাকী বলেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলায় পাটের আঁশ কিংবা বীজ উৎপাদন অনেক ভালো। চাষিদের আগ্রহ রয়েছে পাট চাষের প্রতি। আর এ ব্যাপারটি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি বেশ কয়েকবার। আশা করি ব্যাপারটি তারা গুরুত্ব সহকারে দেখে জেলার পাট চাষিদের সুবিধার্থে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।