স্টাফ রিপোর্টার: হরিজন সম্প্রদায়ের নারী সোনিয়া বাঁশফোড়। ১৫ বছর ধরে দর্শনা বন্দরে একটি পাবলিক টয়লেট লিজ নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সারাদিনে আয় ৩শ থেকে ৪শ টাকা। অভাব আছে, আছে চাহিদা। তবে নেই লোভ, আর পরের সম্পদের প্রতি মোহ। একজন যাত্রীর ফেলে যাওয়া এক লাখ টাকা পেয়ে ফেরত দিলেন সোনিয়া। গতকাল শুক্রবার দুপুরে দর্শনা বন্দরে বেড়াতে আসেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি বাজারের বীজ ব্যবসায়ী ও শিক্ষক হাফিজুর রহমান। এরপর টয়লেটে যান তিনি। টয়লেট শেষ করে ভুলে কাছে থাকা ব্যাগ ফেলে চলে যান। প্রায় আধা ঘণ্টা পর মনে হয় তার। ব্যাগে ছিলো এক লাখ টাকা। এরই মধ্যে সোনিয়া বাঁশফোড় সযতেœ ব্যাগটি তুলে রাখেন। এরপর সবাইকে ডেকে নিয়ে ব্যাগটি ফেরত দেন। ব্যাগ খুলে এক লাখ টাকা বুঝে পেয়ে বিস্মিত হন ব্যাগের মালিক মো. হাফিজুর রহমান। হাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাগে এক লাখ টাকা নিয়ে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় যাচ্ছিলাম বীজ কিনতে। পথিমধ্যে দর্শনা বন্দরে এসেছিলাম দেখার জন্য। এরপর টয়লেটে যায়। সেখানে ব্যাগটি ফেলে যায়। মনে ছিলো না। প্রায় ২০-২৫ মিনিট পর ব্যাগের কথা মনে পড়ে। তখন ছুটে আসি। এই দিদি যে মহত্ব দেখিয়েছে তাতে আমি অভিভূত। সে টাকাটা বের করে নিয়ে অস্বীকার করতে পারতো। টাকাসহ ব্যাগটি প্রকৃত মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে খুশি সোনিয়া বাঁশফোড়। সোনিয়া বলেন, ‘টয়লেটে কাজ করি। এটা আমার রুটি-রুজি। ব্যাগ আর টাকাতো উনার। এটা আমি নেব কেন? আমি তুলে রেখেছি এরপর ফেরত দিয়েছি। এর আগে মোবাইল ও সোনার আংটি পেয়েছিলাম সেগুলোও ফেরত দিয়েছি।’ এদিকে হরিজন সম্প্রদায়ের এই নারীর এমন সততায় মুগ্ধ উপস্থিত জনতা। এ ঘটনায় শিক্ষা নিলে সমাজ-দেশ আরও সুন্দর হবে বলে মন্তব্য করেন তারা। সবাই সোনিয়া বাঁশফোড়কে সাধুবাদ জানান।