মিরাজুল ইসলাম মিরাজ : চুয়াডাঙ্গার মাঠগুলোতে সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুল। সরিষার হলুদ ফুলে বসছে মধু সংগ্রহকারী কর্মঠ মৌমাছির দল। ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছিদের গুঞ্জনে কৃষকের মন মাতিয়ে তুলছে। চলতি মরসুমে এ জেলার কৃষকেরা সরিষার ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদী। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যনুযায়ী, চলতি মরসুমে এ জেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩ হাজার ৭৪৯ হেক্টর জমিতে। আর জেলার চার উপজেলায় অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মরসুমে কৃষকরা এবার উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা আবাদ করেছেন বেশী। এখনো পর্যন্ত সরিষা গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল রয়েছে, আবার কিছু কিছু ক্ষেতে ফল ধরতে শুরু করেছে। যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ বা বিশেষ ক্ষতির কিছু না ঘটে তাহলে এবার ব্যাপক ফলন হবে সরিষার। সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর উপজেলার বেগমপুর, বলদিয়া, দামুড়হুদা উপজেলার জয়নগর, হোগলডাঙ্গা, মোক্তারপুর ও বাস্তপুর, রঘুনাথপুর, কার্পাসডাঙ্গা সীমান্ত ইউনিয়নের কানাঈডাঙ্গার মাঠে সরিষার ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, সরিষার ক্ষেতে হলুদ ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা আশপাশের ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সরিষার হলুদ ফুলগুলো থেকে দানা বাঁধবে সরিষার। দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের সরিষা চাষি মোস্তফা কামাল বলেন, তাদের লাগানো সরিষা ক্ষেতে সরিষার আবাদ মোটামুটি ভালো হয়েছে। এ চাষে সময় ও খরচ অনেক কম হয়, তবে তুলনামূলকভাবে লাভবান হয় চাষি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বলদিয়া গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, এবার সরিষার ক্ষেতে ব্যাপক ফুল হয়েছে। আশা করছি এ মরসুমে ভালো ফলন পাবো। দামটা একটু ভালো হলে অনেক লাভবান হবো। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিখাত ও কৃষকদের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। কৃষিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন সরকার। সরকারের কৃষিবান্ধবনীতি আর নানামুখি প্রণোদনার ফলে বিগত বছরগুলোর ন্যায় দেশে অন্যান্য ফসলের মতোই তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে স্বল্পকালীন উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের সরিষার জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। সরিষা চাষে চাষিরা আগামীতে ব্যাপক লাভবান হবেন। তিনি আরো বলেন, দেশে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে দেশের বাইরে থেকে খাদ্য তেল আমদানি কম করতে হবে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে।