স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট ও বুচার শপের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার ভালাইপুর বাজার চত্বরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপদ মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার উন্নয়ন শীর্ষক ভ্যালু চেইন উপ-প্রকল্পের আওতায় আয়োজনে ছিলেন ওয়েভ ফাউন্ডেশন। আর সহযোগিতায় ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। আয়োজকরা জানান, আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে মিট প্রসেসিংয়ের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে এবং সেপ্টেস্বর মাস থেকে বাজারজাতকরণ করা হবে। এই মাংস প্রক্রিয়াজাত করণের উদ্যোক্তা জিল্লুর রহমান ও মহসীন রেজা।
অনুষ্ঠানে সভাপত্বিত করেন ভালাইপুর বাজার কমিটির উপদেষ্টা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক নির্মল দাস। তিনি বলেন, এখানে এ প্লান্টের মাধ্যমে নিরাপদ মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হবে। এতে মাংসের গুণগত মান বৃদ্ধি করা যাবে। একটা নিরাপদ মাংস এখান থেকে গুণগত মান ঠিক রেখে মাংস প্রক্রিয়া করা হবে। এখান থেকে মাংস সঠিকভাবে এবং মাংসের গুণগতমান ঠিক রেখে মাংস প্রক্রিয়া করে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে। খামারি মালিকরা তাদের উৎপাদিত গরু ছাগল মোটাতাজা করে এখানে নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিস্কার ও পরিছন্ন করে এখান থেকে জবাই করে মাংস প্রক্রিয়া করে মাংস সরবরাহ করতে পারবেন। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে। মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট ও বুচার শপের ভিত্তিপ্রস্তের স্থাপনের কাজ কি এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন ভেটেরিনারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়াজেদ আলী। এরপর আলোচনাসভায় ভালাইপুর বাজারের মাংস ব্যবসায়ীদের সাথে উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়। পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) কর্মকর্তা মোহা. আলাউদ্দিন বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাংস প্রক্রিয়াকরণ করা হবে। এতে বাজারে না এসে অনলাইনের মাধ্যমে ভোক্তা মাংস পেয়ে যাবে। এতে স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ অবদান রাখবে। এতে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে। একই সাথে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাংস প্রক্রিয়া করা হবে। সভায় প্রধান অতিথি ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসীন আলী বলেন, চুয়াডাঙ্গার যেখানে সেখানে গরু ও ছাগল জবাই হয়। এতে পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই অপরিস্কারভাবে পশু জবাই করে। এখানে কিন্তু এটা হবে না। পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাংস প্রক্রিয়া করা হবে। খামারিদের ছাগল ও গরু এই মাংস প্রক্রিয়াজাত করণে নিয়ে এসে খুব ভালোভাবে মাংস প্রক্রিয়া করে তাদের দেয়া হবে। ধুলাবালি মাছি এইসব নোংরা অবস্থায় মাংস প্রক্রিয়া হয়ে আসছে। আর এখানে কিন্তু পরিস্কার ও পরিছন্ন ভালোভাবে হালালরুপে মাংস প্রক্রিয়া করা হবে। এখানে পশু জবাইয়ের একটা আলাদা অংশ থাকবে, মাংসের একটা আলাদা অংশ থাকবে, আলাদা আলাদাভাবে মাংস প্রক্রিয়া করে মাংস সরবরাহ করা হবে। এতে উদ্যোক্তা আরো বাড়বে ও ভোক্তারও প্রসার ঘটবে। এতে স্বাস্থ্যখাতে যেমন অবদান রাখবে ঠিক তেমনি এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আর উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে রুপ নেবে। আর এই মাংসের প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রাণিখাতে বিশেষ অবদান রাখবে বলে আশা করি। আর আগামী তিন মাসের মধ্যে এই মাংস প্রক্রিয়াজাত করণ শুরু করা হবে।
এরপর সভার শেষ পর্বে চুয়াডাঙ্গায় মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট ও বুচার শপের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসীন আলী। এ সময় দোয়া পরিচালনা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ওয়েভ ফাউন্ডেশন উপ-নির্বাহী পরিচালক নাসিফা আলী, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের পরিচালক ইফতেকার হোসেন, উপ-পরিচালক জহির রায়হান সোহাগ, অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, সিনিয়র সমন্বয়কারী আনিসুর রহমান, সহকারী পরিচালক কিতাব আলী, সহ-সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম লিটন, সিনিয়র সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের এডভাইজার আব্দুস শুকুর ও এরিয়া ম্যানেজার মামুন মিয়া, প্রোগ্রাম অফিসার কানিজ সুলতানা, আরিফুল ইসলাম সুরুজ, ফরাদ হোসেন, আশরাফুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা লোকমোর্চার সহ-সভাপতি তানজিলা মিনি, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক পারভিন লাইলা, সদস্য শিরিনা আক্তার ডলি, ইলিয়াস হোসেন, উম্মে হাবিবা ও শেখ লিটন।