স্টাফ রিপোর্টার: টানা দেড় বছর যাবত প্রেমেজ সম্পর্ক দুজনের। এমনকি উভয়ের পরিবারও বিষয়টি জানতো। বিয়ের আশ্বাস ও দিয়েছিল মেয়ের বাবা। হঠাৎ মেয়ের বাবা ভালো পাত্র পেয়ে কথিত মেয়ের প্রেমিককে এড়িয়ে চলতে লাগতো। এ নিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি হলে প্রেমিক হাসেম আলী মেয়ের বাড়িতে গেলে মেয়ের বাব-চাচারা তাকে মারধর ও নির্যাতন করে। একপর্যায়ে প্রেমিকার বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা করে হাসেম আলী (২২)। এমনই অভিযোগ হাসেম আলীর পরিবারের। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র গ্রামের পুরোনোপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। আহত হাসেম আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, শঙ্করচন্দ্র গ্রামের পুরোনোপাড়ায় মহির উদ্দিনের ছেলে হাসেম আলীর সাথে একই এলাকার ফারুক হোসেনের মেয়ে ইভার সাথে প্রেমেজ সম্পর্ক চলে আসছিল। হাসেম আলী চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র ও ইভা খাতুন ডিঙ্গেদহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী।
হাসেম আলীর পরিবারের সদস্যরা জানায়, মেয়ের পরিবারের লোকজন তাদের সম্পর্কটা জানতো। বিয়ের আশ্বাসও দিয়েছিল মেয়ের পরিবারের লোকজন। হাসেমকে বাড়িতে ডেকে মাঝেমধ্যেই জামায় আদর করে খাওয়াতো। এমনকি মাঠেঘাটে তাকে দিয়ে কাজ ও করিয়ে নিতো। হঠাৎ কিছুদিন যাবত শোনা যাচ্ছে মেয়ের বাবা অন্য কারোর সাথে মেয়ের বিয়ে ঠিক করছেন। এই নিয়ে গতকাল হাসেম আলী ইভাদের বাড়িতে গেলে তাকে মারধর করেন মেয়ের বাব-চাচারা। একপর্যায়ে সেখানেই বিষপান করে হাসেম। তারপরও তাকে ঘরে আটকে রেখে মারপিট করতে থাকে তারা। পরে বিষয়টি জানতে পেরে হাসেমের বাবা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা আরও বলেন, হাসেম আলীর মা কিছুদিন আগে মারা গেছেন। সবার সামনে বিষপানের পরও তাকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরে আটকে রেখে মারধর করেছে। এটা তাদের চরম অন্যায়।
এদিকে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ইভা খাতুনের পরিবারের সদস্যরা। ইভার বাবা বলেন, হাসেম আলীকে আমরা কোন মারধর করিনি। আর বিষ কখন কোথায় খেয়েছে আমরা তাও জানি না। তারা নিজেরাই মারধর করে আমাদের নামে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে হাসেম আলী আমাদের বাড়িতে এসে বলে, আপনার মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে দিতে হবে। অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিলে আমি আত্মহত্যা করবো। একটু পর বাড়ির বাইরে চিৎকার চেচামেচি দেখে শুনতে পাই হাসেম আলী নাকি বিষপান করেছে। তবে আমার মেয়ের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, হাসেম আলীর অবস্থা শঙ্কামুক্ত কিনা এখনি বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।