চুয়াডাঙ্গায় পূর্ব বিরোধের জেরে মারামারি : উভয়পক্ষের ৩জন আহত

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গোবরগাড়ায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের তিনজন আহতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে গোবরগাড়া গ্রামের খালপাড়া বোডিংয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। একপক্ষের দাবি পাওয়া টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হয়েছেন। অপরপক্ষ বলছেন, মাল্টা বিক্রির ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় দুপক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের দাবি, পাওয়া টাকা চাওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতেই হামলাকারীরা টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজাচ্ছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। প্রথমপক্ষের আহতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গোবরগাড়া গ্রামের আনন্দবাজারপাড়ার আশরাফ আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন (১৮)। দ্বিতীয় পক্ষের আহতরা হলেন, একই গ্রামের আলী হোসেনের দুই ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) ও শাহ আলম (৩৮)। আহত সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রায় দুই বছর আগে শাহ আলমের নিকট পেয়ারা বিক্রির ৫০ হাজার টাকা পায় আমার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন। এ টাকা চাওয়া নিয়ে শাহ আলমের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে বুধবার টাকা চাইতে গেলে শাহ আলমের আপন ছোট ভাই সোহেল দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। ওই সময় সোহেলসহ তার তিন ভাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় রক্তাক্ত অবস্থায় সাদ্দামকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত শাহ আলম অভিযোগ করে বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আমি ও আমার ভাই জাহাঙ্গীর আলম আমাদের মাল্টাবাগানে কাজ করছিলাম। এর আগে সকালে ১ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি আমরা। সেই টাকা আমাদের নিকট ছিলো। ক্রেতারা চলে যাবার প্রায় আধাঘণ্টা পর সাদ্দাম, রাজুসহ কয়েকজন আমার ভাই জাহাঙ্গীরকে মারধর করে তার নিকট থাকা মাল্টা বিক্রির ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় জাহাঙ্গীর চিৎকার করলে আমরা তাদেরকে প্রতিরোধ করি। এসময় দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। আমরাও তাদের মেরেছি, ওরাও আমাদের মেরেছে। তিনি আরও বলেন, আমার নিকট পেয়ারা বিক্রির কোনো টাকা পায়না সাদ্দাম হোসেন। আর আমরা আমাদের মাঠে ছিলাম। এ মাঠ এলাকায় সাদ্দামদের কোনো জমি নেই। মূলত টাকা ছিনতাই করার জন্যেই এসেছিলো। আমাদের এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে তারা। আমি এ বিষয়ে মামলা করবো বলে জানান তিনি। এদিকে খবর পেয়ে তিতুদহ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনারুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উপ-পরিদর্শক আনারুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সাদ্দাম হোসেন তার পেয়ারা বিক্রির টাকা চাইতে গেলে তাদের ওপর হামলা করেছে তিনভাই শাহ আলম, জাহাঙ্গীর ও সোহেল। এসময় দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শাহ আলমের মাল্টা বিক্রির টাকা ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত পাওনা টাকা চাওয়ায় তাদের ওপর হামলার ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়েই নাটক সাজানো হচ্ছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নূর জাহান রুমি বলেন, তিনজনের শরীরে জখমের আলামত আছে। ধারালো অস্ত্র নাকি শক্ত লাঠির আঘাত এটা নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি বিষয়ে জানতে পেরেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments (0)
Add Comment