চুয়াডাঙ্গায় তিনদিনের বৈশাখী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত তিনদিনের বৈশাখী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ড এরিয়ায় অবস্থিত জেলা শিল্পকলা একাডেমীর  মুক্তমঞ্চে এ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে  সেরা উদ্যোক্তা স্টল মালিকদের মধ্য থেকে তিনজনকে ক্রেস্ট প্রদান করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। একই সাথে বৈশাখী মেলায় অংশগ্রহণকারী ৩৫জন উদ্যোক্তা স্টল মালিকদের হাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত প্রশাসক ডিডিএলজি শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, (শিক্ষা ও আইসিটি) নয়ন কুমার রাজবংশী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আশিক মমতাজ, এনডিসি সাইফুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই বৈশাখী মেলায় স্টল মালিকদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে সুইট ড্রিম কেক স্টল চুয়াডাঙ্গা, দ্বিতীয় স্থান দখলকরে অন্বেষা নারী কল্যাণ সংস্থা ও আরকে বাক্স চুয়াডাঙ্গা এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে তৃণমুল ফুড কর্নার। এছাড়া বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জেলার শিশু একাডেমির আয়োজনে চিত্রাংকন ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি গণ গ্রন্থাগারের আয়োজনে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতেও পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে চুয়াডাঙ্গা সংলাপ সাংস্কৃতিক সংগঠন ও অরিন্দমের শিল্পীবৃন্দ নাচে গানে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরিয়ে তোলে। এছাড়া গত পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী দলসমূহের মধ্য থেকে তিনটি গ্রুপের প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদলের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম। ক, খ, গ তিনটি গ্রুপে অংশগ্রহণকারী দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বাঙালি ঐতিহ্য ও বাংলার পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকা হাজার বছরের বাঙালীয়ানাকে তুলে ধরার মাধ্যমে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। এই প্রতিযোগিতায়  প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারীদের নির্বাচন করতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ১৫ জন বিচারককে দায়িত্ব দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা শহরের তিনটি স্পটে  এ সকল বিচারকগণ অবস্থান নিয়ে  নিষ্ঠার সাথে সকল দলের উপস্থাপনাকে  গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করে তাদেরকে  মূল্যায়ন করেন।  সকল বিচারকদের বিচারে ‘ক’ বিভাগ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে রেলবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২য় স্থান অধিকার করে কেদারগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে ইসলাম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ‘খ’ বিভাগে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দলগুলোর মধ্যেও চলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করে চুয়াডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমি ও তৃতীয়  স্থান অধিকার করে মালিক আব্দুল বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ‘গ’ বিভাগে অংশগ্রহণ করে কলেজ ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। এই গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, তৃতীয় স্থান অধিকার  করে ওয়েভ ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা। তিন গ্রুপের এ সকল দল ও প্রতিষ্ঠানকেও গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপনী ও পুনস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে লোকজ সাংস্কৃতিক মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলামের সভাপতিত্বে লোকজ সাংস্কৃতিক মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অংশ গ্রহণকারী সকলকে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম মাস্টার, উপজেলা রিসোর্চ সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর জামাল হোসেন, প্রভাষক একেএম ফারুক হোসেন, এমদাদ হোসেন, হাটবোয়ায়িলা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহিম (আসিফ জাহান), আলমডাঙ্গা মাধবপুর মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক (চারু ও কারুকলা) আক্তারুজ্জামানসহ নারী উদ্যোক্তা, মেলায় আগত দর্শনার্থী।  শুভ নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক মেলার স্টলগুলোতে বাংলা ঐতিহ্য ফুটে ওঠে।

দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চে এই সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ক্রেস্ট, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিদের মাঝে ১ম, ২য়, ও ৩য় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার এবং তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মৈলায় সংগীত পরিবেশনকারী সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মেলায় অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনকারী স্টলকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজোহা পলাশ, একাডেমিক সুপারভাইজার মাধ্যমিক রাফিজুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অঞ্জন কুন্ড, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা  হোসনে জাহান, পাট কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলামসহ মেলা আগত দর্শনার্থীবৃন্দ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপজেলা সমবায় অফিসার হারুন অর রশীদ।