চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে ক্রমাগত গরম বাড়ছেই : আপতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই

ঢাকাসহ সাত জেলা ও খুলনা বিভাগে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে ক্রমাগত গরম বাড়ছেই। রাজধানী ঢাকাসহ সাত জেলা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা বিস্তার লাভ করতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে এ তাপপ্রবাহ ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো যশোর ও রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও ফরিদপুরে ৩৬ ডিগ্রি, গোপালগঞ্জে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি, ঈশ্বরদীতে ৩৭ ডিগ্রি, নওগায় ৩৬ ডিগ্রি, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৩৬ ডিগ্রি, রাঙ্গামাটিতে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ফেনিতে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি, লক্ষ্মীপুরের রামগাতিতে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি, খুলনায় ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি, কয়রায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, বাঘেরহাটের মংলায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, সাতক্ষিরায় ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, বরিশালে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি, পটুয়াখালীতে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো চট্টগ্রামের সীতাকু-ুতে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, এই তাপপ্রবাহ ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও নেই। ঈদের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েক জেলায় তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহনীলু ইসলাম জানিয়েছেন, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত ও বিস্তার লাভ করতে পারে। শুক্রবার সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে । গত ৩ দিনে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রির বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২৫ শতাংশ। গতকাল বুধবার জেলায় তাপমাত্রা ছিলো ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিলো ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমের কারণে ধীরে ধীরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। গত ১৩ মার্চ প্রথম গরমের তাপমাত্রা রেকর্ড শুরু হয়। ওইদিন বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২৬ শতাংশ। এর আগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠকর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সময় বাতাসের আর্দ্রাতার পরিমাণ ছিলো ২৫শতাংশ। তিনি আরও জানান ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা হলে সেটাকে আমরা মৃদু তাপপ্রবাহ ও ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ গণ্য করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় গত বছর ৩০ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেশি থাকে।