স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টাক্ষেতগুলোতে আবারও উল্লেখযোগ্য আকারে দেখা দিয়েছে বিধ্বংসী পোকা ফল আর্মিওয়ার্মের আক্রমণ। এতে ভুট্টাক্ষেতের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চলতি খরিপ মরসুমে ভুট্টার আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে আক্রান্ত এলাকার কৃষকদের সচেতন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (সিমিট)।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত রবি মরসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় ৪৯ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেন কৃষকরা। যা চলতি খরিপ মরসুমে আবাদ হয়েছে ৫৭ হেক্টর। চুয়াডাঙ্গার মাটি ও আবহাওয়া ভালো হওয়ায় রবি মরসুমের পাশাপাশি খরিপ মরসুমেও উল্লেখযোগ্য হারে ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। সদর উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের কৃষক খাজা মইন উদ্দিন জানান, আমরা সাধারণত রবি মরসুমে ভুট্টার আবাদ করি। লাভজনক হওয়ায় খরিপ মরসুমেও ভুট্টার আবাদ করেছি। ভুট্টার গাছগুলোও ভালো হয়েছে। কিন্তু পোকায় খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে ক্ষেত। কীটনাশক দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। গাছ যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে অনেক টাকা লোকসান হবে। এ নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি।
এদিকে, ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট)। বিধ্বংসী পোকার আক্রমণ রোধ ও ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চুয়াডাঙ্গার একটি আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওই প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র-বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যশোরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওসার উদ্দিন আহাম্মেদ। এছাড়া আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্রের সিনিয়র কনসালটেন্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ড. আবদুল মুঈদ ও যশোর অঞ্চলের ব্যবস্থাপক ড. খন্দকার শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এই প্রশিক্ষণ কোর্সটিতে মূল প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত, অন্যতম কীটতত্ত্ববিদ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক (গবেষণা) সিমিটের সিনিয়র কনসালটেন্ট ড. সৈয়দ নুরুল আলম। গত ২৭ মে থেকে শুরু হওয়ায় ওই প্রশিক্ষণ চলবে আগামী ১ জুন পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ৩টি ব্যাচে ১০টি জেলা থেকে মোট ১২০ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। প্রতি ব্যাচ ২ দিন করে ওই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে।