ক্রিকেটার তামিমের চিকিৎসা : প্রশংসায় ভাসছেন চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ

মুর্শিদ কলিন/সোহেল হুদা: বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার তামিম ইকবাল যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন তার প্রাণ বাঁচাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গার কৃতি চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ। হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুততম সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে হয়তো অন্য কোনো খবর লেখা হতো। গত পরশু সোমবার সকাল ৯টার দিকে বিকেএসপির মাঠে ম্যাচ চলাকালে তামিম ইকবাল বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে দ্রুত তাকে সাভারের নবীনগরে কোপিজ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই দায়িত্ব নেন ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়ার গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আব্দুল খালেকের সন্তান ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ কোপিজ স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। চুয়াডাঙ্গার কৃতি চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ‘তামিম ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করে তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে বলা যায় তিনি এখন বিপদমুক্ত। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারতো তবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে এখন তিনি সুস্থতার পথে রয়েছেন।’ দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সাহসিকতার সমন্বয়ে তামিম ইকবালকে আল্লাহর ইচ্ছায় নতুন জীবন দিলেন এই চিকিৎসক। পিতা আব্দুল খালেক মাথাভাঙ্গাকে জানান, মনিরুজ্জামান মারুফ ১৯৯৬ সালে যশোর জেলা স্কুল থেকে স্টার মার্কস নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে এসএসসি পাশ করে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তি হয়। সেখান থেকেও স্টার মার্কস নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে ১৯৯৮ সালে ১ম বিভাগে এইচএসসি পাশ করে। সে বছরই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। ২০০৬ সালে মারুফ এমবিবিএস পাশ করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে জয়েন করে। এরপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে যোগ দান করে। বর্তমানে ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ কোপিজ স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। মারুফ দীর্ঘদিন ধরে কার্ডিওলজির জটিল রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছে। মারুফের স্ত্রী এমবিবিএস ডাক্তার, ৭ বছরের এক মাত্র ছেলেকে নিয়ে সাভার রেডিও কলোনি এলাকায় বসবাস করছে। তিনি ছেলে ডা. মনিরুজ্জামান মারুফের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর নিকট দোয়া চেয়েছেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হার্ট অ্যাটাকের পর জরুরি চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। কিন্তু সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তামিম ইকবালের ক্ষেত্রেও তা প্রমাণ হলো। ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার চিকিৎসক দলের সফলতা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।