কুষ্টিয়ায় ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া মারা গেছেন। তিনি টানা ২২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে রোববার রাত সাড়ে ১২টায় মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ বছর বয়ষী বিধবা আয়শা সিদ্দিকা ঝড়ার মৃত্যু হয়।
গত ১১জুন গভীর রাতে শহরের হাউজিং এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা ওই নারীকে নিজ বাসার সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে।
ঝড়ার অভিযোগ ছিল- পাওনা টাকা না দেয়ার জন্য পূর্বপরিকল্পিত এই হামলা করেছে আমার ওপর।
কুষ্টিয়অ হাউজিং ডি ব্লক ৪৫৬নং ভবনের ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া ও তার লিপি খাতুন। ঘটনার দিন রাতে তাদের পাওনা টাকা ফেরত দেয়া হবে বলে সন্দিগ্ধ জড়িতরা শহরের পুনাক ফুড পার্কে যেতে বলে। সেখানে যাওয়ার পর দেনাদার রাশেদ আহমেদসহ আরও ৪ জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে গভীর রাতে নিজ বাসার সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। ঝড়ার মা লিপি খাতুন থানায় মামলার এজহারে এসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, গত ১১ জুন রাত ১১টায় আয়শা সিদ্দিকা ঝড়া (৩০) নামে এক নারীকে রক্তাক্ত জখমে গুরুতর আহতাবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার পিছন দিক থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুই পায়ের লিগামেন্টসহ রক্ত নালী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ওইদিন রাতেই তারা রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারীর মা এবং মামলার এজাহারকারী সদর উপজেলার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বুলুর স্ত্রী লিপি খাতুনের অভিযোগ, ওইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুনাক ফুড পার্কে পাওনা টাকা দেয়ার জন্য আমাদের ডেকে নিয়ে যায় ইবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ। সেখানে গিয়ে দেখি যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজু, আনিসুর রহমান বিকাশ, বিপুল আহমেদ ও জাকির হোসেনসহ আরও ২-৩ জন সেখানে উপস্থিত। পূর্ব কথামতো রাশেদ পাওনা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং ঝড়ার সঙ্গে ঝগড়া, তর্কাতর্কি ও কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে সেখান থেকে রাত সোয়া ১০টার দিকে বেড়িয়ে মিজানুর রহমান মিজু, আনিসুর রহমান বিকাশ, বিপুল আহমেদের একটি সাদা রংয়ের কারে উঠে বাসার উদ্দেশে ফিরে আসি। বাসার সামনে পৌঁছা মাত্রই ৪ জন লোক আমাদের ওপর হামলা করে। হামলার সময় গাড়িতে বসে থাকা মিজু ও বিকাশ বাইরে বের হননি। মিজু বিকাশ বিপুল ও রাশেদের যোগসাজসেই এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ লিপি খাতুনের।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক তাপস কুমার পাল জানান, তদন্ত শুরু করেছি, কিছু প্রাসঙ্গিক আলামতসহ ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলি বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা চলছে। আশা করি খুব শিগগিরই জড়িদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারবো।