দর্শনা অফিস: দর্শনা পৌর কাউন্সিলর কর্তৃক পৌর প্রকৌশলীর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পৌর মেয়র বাদি হয়ে দুই কাউন্সিলরসহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলোও মামলা রুজু হয়নি আজও। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আন্দোলনের হুমকি থাকলে মাঠে নামছে না কেউ। গত ১৭ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে দর্শনা পৌরসভায় জনৈক ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্সকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকা ও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলমের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সাজেদুল আলমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ তোলা হয় মিকার বিরুদ্ধে। অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয় ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকা দীর্ঘদিন ধরেই পৌরসভার উন্নয়নে বাধা সৃষ্টিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে সাবির হোসেন মিকা, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান খালেকুজ্জামান, শ্যামপুর জোড়া বটতলার জাহিদুল ইসলাম, শ্যামপুরের রাশিদুল, ইসলাম বাজারপাড়ার সিজার হোসেন ও দক্ষিণচাঁদপুরের মোস্তাকসহ ১০-১২ জন ভয়ভীতি দেখিয়ে আইন বহির্ভূতভাবে ট্রেড লাইসেন্স ও জন্ম নিবন্ধন নিয়ে জুলুম করে। তারা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলমের কক্ষে গিয়ে জোরপূর্বক ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করার চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় তারা প্রকৌশলীকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। সেই সাথে অফিসের কাগজপত্র তছরুপ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। লাঞ্ছিত করে প্রকৌশলী সাজেদুল আলমকে। কক্ষে ত্রাসের সৃষ্টি করে আলমারী থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৩৩৫ টাকা নিয়ে যায়। ১৮ জুলাই থানায় এ মামলা দায়ের করেন মেয়র মতিয়ার রহমান। দীর্ঘ ১০ দিনেও অজ্ঞাত কারণে মামলাটি রুজু করা হয়নি। এ বিষয়ে মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, সরকারি অফিসে হামলা-ভাঙচুর ও লুটের ঘটনায় মামলা করা হলেও কেনো তা রুজু করা হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। আমি যেখানে পৌর এলাকাকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শান্ত রাখার ভূমিকা পালন করে আসছি দীর্ঘদিন, সেখানে আমার কার্যালয়ে হামলার পরও আসামি দিব্বি ঘুরলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। হামলাকারীরা কোন খুঁটির জোরে চলছে তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, চেষ্টা করছি দুপক্ষের মধ্যে মিমাংসার। শেষ পর্যন্ত মিমাংসা না হলে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এদিকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিমত ব্যক্ত করে বলেছে, পৌরসভা মানে মেয়রের কার্যালয়। সেই কার্যালয়ে যারা হামলা চালানোর দুঃসাহস রাখে তাদের কাছে আমরা কিভাবে নিরাপদ। ফলে আসামিদের প্রকাশ্য ঘোরাফেরায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই বিকেলে এ হামলা ঘটনার প্রতিবাদসহ হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে দর্শনা পৌরসভার সামনে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করেছে মানববন্ধন কর্মসূচি। ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় সাবির হোসেন মিকা, হাসান খালেকুজ্জামান ও কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন দর্শনা প্রেসক্লাবে করেছেন সাংবাদিক সম্মেলন। ২১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে দর্শনা পৌরসভার হলরুমে মেয়র মতিয়ার রহমান হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী তুলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে কলম বিরতীসহ নানা কর্মসূচির হুমকি দেয়া হচ্ছে, পাশাপাশি সাবির হোসেন মিকার পক্ষে দেয়া হচ্ছে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের হুমকি।