দামুড়হুদায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে বেড়েছে কামারদের ব্যস্ততা
বখতিয়ার হোসেন বকুল: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে সরব হয়ে উঠেছে কামারপল্লী। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের জন্য চলছে ডাসা, ছুরি পোড়ানোর হিড়িক। কেউ কেউ কিনছেন নতুন ছুরি, দা, বটিসহ চাপাতি। চাপাতি, দা, বটি, চাকু, ছুরিসহ কোরবানির নানা হাতিয়ার পোড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কামারপল্লীর কামাররা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে তাদের ব্যস্ততা। সার্বক্ষণিক বাতাসে ভাসছে টুং টাং শব্দ। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। তবে শেষ মুহূর্তে কাজের ব্যস্ততা বাড়লেও হাসি নেই তাদের মুখে। তারা বলেছেন করোনা থামিয়ে দিয়েছে কাজের গতি। কেড়ে নিয়েছে মুখের হাসি। উপজেলার বিভিন্ন কামারশালা সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে যাওয়া হয় দামুড়হুদার ডুগডুগি বাজারস্থ কামারপল্লীতে। প্রথমেই যাওয়া হয় মন্টু কামারের দোকানে। কেমন আছেন দাদা? জানতে চাইলে মন্টু কর্মকার মৃদু হেসে বললেন ভাই খুব একটা ভালো নেই। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাজ নেই বললেই চলে। দু’দিন ধরে কাজ আসতে শুরু করেছে। করোনার প্রভাবে এবার ঈদে খুব বেশি কোরবানি বেশি হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ফলে কাজও না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। আপনি রাস্তার ওই পারে যান। ওখানে সুনীল কর্মকারের দোকানে দা-বটি পোড়াতে কিছু লোকজন এসেছেন।
মন্টু কর্মকারের কথামতো যাওয়া হয় রাস্তার ওপারে। দেখা মিললো বেশকিছু লোকজনের। অনেকেই দা-বটি, ছুরি পোড়াতে এসেছেন কামারশালায়। একজন হাপর টানছেন। সুনীল কর্মকার জ্বলন্ত আগুন থেকে লোহা তুলে সমানতালে পেটাচ্ছেন আর শান্তি কর্মকার, দীপক কর্মকার এবং শ্যামল কর্মকার এরা কাজে বেশ ব্যস্ত। যেন কথা বলার সময় নেই কারো। এরই এক ফাঁকে কথা হলো তাদের সাথে। তারাও মন্টু কামারের মতোই অভিন্ন ভাষায় বললেন দাদা, প্রায় দু’মাস কর্মহীন থাকার পর মাত্র কয়েকদিন হচ্ছে একটু কাজের চাপ বেড়েছে। একটি ডাসা পোড়াতে ৬০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এছাড়া ছুরি, দা, বটি, হোঁসো এগুলো ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কাজের ধরণ বুঝে নেয়া হয়। ৫শ’ টাকা কেজি দরে নতুন একটি ডাসা বা দা ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয় বলেও জানান তারা। এছাড়া ডুগডুগি বাজারের রয়েছে গোড়াচাঁদ কর্মকার, অর্জুণ কর্মকার এবং পঙ্কজ কর্মকারের দোকান। তারাও একই সুরে বললেন, ১০ দিন আগেও কাজই ছিলো না। ঈদ উপলক্ষে অন্যান্য বছর যে পরিমাণ কাজ হয় তার ৪ ভাগের একভাগও নেই। কেউ কেউ দা, বটি, হেঁসো, কাঁচি, নিড়িণ পোড়াতে আসছেন। এদিকে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের বিদ্যুত কামার বলেছেন, দাদা এবার কাজের কোন চাপই নেই। কোনো রকম দিন পার করছি। তিনি আরও বলেছেন, করোনা থামিয়ে দিয়েছে কাজের গতি। কেড়ে নিয়েছে কর্মকারদের মুখের হাসি।