স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের রংপুরে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার এশার নামাজের পর রংপুর মাঝেপাড়া পুরাতন জামে মসজিদের উদ্যোগে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মো. নিজাম উদ্দীন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মাহফিলে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা আর কোনো বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের ট্যাক্সের অর্থেই রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। তাই আমাদের সন্তানদের শিক্ষার অধিকার, কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে একমাত্র ঐক্যই আমাদের হাতিয়ার। যারা আমাদের সন্তানদের সর্বোচ্চ ভালো ফলাফলের পরেও চাকরি থেকে বঞ্চিত করেছে এমন স্বৈরশাসক যেন আর কখনো ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ শীতকালীন ওয়াজ মাহফিলের গুরুত্ব উল্লেখ করে শরীফুজ্জামান বলেন, ‘শীতকাল মানেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য ওয়াজ মাহফিলের অপেক্ষা। শীতের রাতে এসব মাহফিল আমাদের আত্মশুদ্ধির সুযোগ করে দেয়। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই আয়োজনগুলো বন্ধ ছিল। আওয়ামী রীগ নেতাদের অনুমতি নেয়া লাগতো, পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নেয়া লাগতো, কিন্তু এখন আর তা চলবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিল শুধু ধর্মীয় আলোচনা নয়, এটি সমাজ সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ধর্মের সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে এবং মানুষকে সঠিক পথে চলার অনুপ্রেরণা দিতে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এখন সময়ের পরিবর্তনে আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের ধর্মীয় অধিকার চর্চা করতে পারছি। এটি আমাদের জন্য বড় একটি প্রাপ্তি। যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা এই অধিকার ফিরে পেয়েছি আমি সেই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।’ শরীফুজ্জামান বলেন, ‘স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে সব ধর্মপ্রাণ মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্মীয় কার্যক্রম পালন করতে পারবে। দেশের উন্নয়নে তরুণদের শিক্ষার অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া জরুরি। দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে তাফসির পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও খ্যাতিমান মুফাসসির আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয় বক্তা ছিলেন মুফতি ইমরান হুসাইন এবং বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন হাফেজ মাওলানা ইব্রাহিম। মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু। আরও উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বকুল, খাদিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লালন মিয়া, চুয়াডাঙ্গা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল হাসান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান কনক এবং পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাজেদুল আলম মেহেদী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাখাউল, জসিম উদ্দিন, লোকমান হোসেন, তুষার আহমেদ, বায়জিদসহ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।