।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।
আজ ৫ রমজান। রহমত দশকের পঞ্চম দিন। রোজার মাস কুরআনের মাস। রমজান মাসের বিশেষত্ব ও ফজিলতের প্রধান কারণ হলো এই মাসেই মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা, রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য স্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী (বাকারা: ১৮৫)। শুধু তাই নয়, অন্যান্য বড় বড় আসমানী কিতাবও এই মাসেই নাজিল হয়। হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সহীফাসমূহ এই মাসের ১ অথবা ৩ তারিখে নাজিল হয়। হযরত দাউদ (আ.) কে ১২ অথবা ১৮ রমজান যাবূর কিতাব দেয়া হয়। হযরত মুসা (আ.) কে ৬ রমজান তাওরাত কিতাব দেয়া হয়। হযরত ঈসা (আঃ) কে ১২ অথবা ১৩ রমজান ইঞ্জিল কিতাব দেয়া হয়। এতে বোঝা যায় যে, আল্লাহপাকের কিতাবের সাথে এই মাসের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই এই মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলওয়াত করা দরকার। কুরআন হলো একটি জীবন্ত মো’জেজা। এটিই পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যা এখনও অবিকল অবস্থাই আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এর তেলওয়াতের মাধ্যমে আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর নির্দেশনা সম্পর্কে জানা যায়। হাদিসে এসেছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কুরআন শরিফ শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয় (বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিজী)। অন্য এক হাদিসে হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে এক নেকী লাভ করবে এক নেকী দশ নেকীর সমান হবে। আমি বলি না যে ’আলিফ-লাম-মীম’ একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর এবং মীম একটি অক্ষর (তিরমিজী)। এই ছওয়াব রমজান ছাড়া অন্যান্য মাসের জন্য প্রযোজ্য। রমজান মাসে এই ছওয়াব কমছে কম আরও ৭০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। অপর হাদিসে রাসুলে কারীম (সা.) বলেন, তোমরা আল্লাহর নৈকট্য ওই জিনিস হতে অধিক আর কোন জিনিস দ্বারা হাসিল করতে পারবে না, যা স্বয়ং আল্লাহতায়ালা হতে বের হয়েছে, অর্থাৎ কালামে পাক (আবু দাউদ, তিরমিজী)। তাই আসুন, আমরা এই মহিমান্বিত মাসে বেশি বেশি কুরআন তেলওয়াত করি, কুরআনের অর্থ বুুঝি এবং কুরআনের আলোকে জীবন গড়ি। (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)