নজরুল তার বিদ্রোহী কবিতার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনাসভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার: যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় আটচালা ঘর প্রাঙ্গনে স্মৃতিফলকে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে আলোচনাসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে অভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনাসভায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্মকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, তিনি আমাদের অফুরান প্রেরণার উৎস। সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তার প্রাসঙ্গিকতা সবসময় রয়েছে। অসাম্প্রদায়িক, মানবিক, সাম্য ও প্রেমের কবি কাজী নজরুলের দর্শন ও চেতনা সব শ্রেণির মানুষকে সর্বদা অনুপ্রাণিত করে। তাই তার চেতনা ও দর্শন চিরঞ্জীব ও চির অমøান। যতোদিন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য থাকবে ততোদিন কবি নজরুল তার বিদ্রোহী কবিতার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদে সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর ‘পদধ্বনি’ অনুষ্ঠানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও স্বরচিত লেখা পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নজমুল হেলাল। বক্তব্য দেন সাহিত্য পরিষদের অন্যতম উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ। স্বরচিত লেখা পাঠ করেন ইব্রাহিম খলিল, আনছার আলী, সুমন মালিক, সুমন ইকবাল, হারুন অর রশিদ, নাজমুল হক, হোসেন জাকির, শওকত আলী, সিদ্দিক আহমেদ, কবি নজমুল হেলাল প্রমুখ। জাতীয় কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চিরায়ত সাহিত্য থেকে কবিতা আবৃত্তি ও পঠিত লেখার ওপর আলোচনা করেন অ্যাড. বজলুর রহমান এবং মুন্সি আবু সাইফ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কাজল মাহমুদ।
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নজরুল স্মৃতি বিজড়িত পল্লীতে স্মৃতিফলকে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের পুস্পমাল্য অর্পনের পরে নজরুল সাহিত্য সংসদ, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল শিল্পীগোষ্ঠী, আটচালা ঘর মালিক পুস্পমাল্য অর্পণ করে। পুস্পমাল্য অর্পণের পর কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে নজরুল স্মৃতি সংসদ কার্যালয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এমএ গফুর, কবি ও শিক্ষক আকলিমা খাতুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আটচালা ঘর মালিক প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল, শিল্পী রঘুনাথ পাল, কার্পাসডাঙ্গা বাজার দোকান মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি হাসিবুজ্জামান শহিদ বিশ্বাস, নিশাত সারমিন সোনিয়া, মিঠু ম-ল, আলো ম-ল, আরিফ, প্রভাষক ইকবাল রেজা, সাইদ, জালাল উদ্দিন, নাসির উদ্দিন, গণেশ কর্মকার, আকাশ, সাইমুন তারিক, শওকত আলী, জমির উদ্দিন, আশাদুল, বুলবুল হক, আবৃত্তি শিল্পী আফসানা কনা, ছাত্রলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ। আলোচনাসভা শেষে নজরুল স্মৃতি শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন নজরুল শিল্পীরা।
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে আলোচনাসভা, স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি আশরাফুন নাহার শোভা। কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা ও কবিতা আবৃত্তি করেন সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা নারায়ণ ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক কবি আব্দুল হামিদ ফকির, নাঈমুর রহমান খান, কাজি তানিম হোসেন, রাজা, মিতুল হুসাইন, বাদশা মিয়া, মোল্লা তসলিম আহম্মদ ও আক্তারুল ইসলাম ইকবাল প্রমুখ। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাহিত্য পরিষদের অন্যতম সদস্য মিতুল হুসাইনের মা বিউটি খাতুন অকাল মৃত্যুবরণ করায় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। আলোচনা সভাশেষে দোয়া পরিচালনা করেন মোল্লা তসলিম আহম্মদ।

 

Comments (0)
Add Comment