সর্দি জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে আরও ১৩ জনের মৃত্যু

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ সারা দেশে সর্দি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে একজন নারীসহ মৃত্যু হয়েছে আটজনের। এর বাইরে রংপুরে দুজন, নড়াইলে একজন, নোয়াখালীতে একজন ও সাতক্ষীরায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

ঢামেক : গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বিকাল পর্যন্ত) ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক নারীসহ আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের শরীরে করোনা পজিটিভ। পজিটিভ ব্যক্তিরা হলেন দিলীপ ঘোষ (৬০) ও সায়েম খন্দকার (৪২)। এ ছাড়া অন্যরা হলেন জীবন (৫০), রুবী (১৬), মোতালেব (৫৫), পারভীন (৬০), রিয়াজ শেখ (২৫), আব্দুল করিম (৯৫)।

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, শ্বাসকষ্ট, কাশিসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বাঁধন ফকির (১৩) নামের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু মারা গেছে। গতকাল সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুবরণকারী বাঁধন ফকির সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামের মিলন ফকিরের ছেলে। নড়াইল সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৪ মে শ্বাসকষ্ট, কাশিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে বাঁধন ফকির সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এলে তাকে আইসোলেসন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়।

রংপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রংপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনই পুরুষ। এদের একজন ব্যবসায়ী, অপরজন পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত ফোরম্যান। এ নিয়ে রংপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪। রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার জানান, মৃত দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নগরীর নবাবগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী বাবলু বণিক কয়েক দিন ধরে সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শনিবার নিউ সেনপাড়ার বাড়িতে তিনি মারা যান। একই দিন রাতে নগরীর শালবন এলাকার পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত ফোরম্যান জহুরুল ইসলাম টুলু করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তার অ্যাজমা ছিলো। রংপুরের সিভিল সার্জন জানান, তারা দুজনই করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিলেন। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, এর আগে পীরগঞ্জে আরও দুজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তাদের নমুনা পরীক্ষা করে পজিটিভ পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তানজিরা খাতুন (৫২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে চার দিন আগে ওই নারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলশেন ইউনিটে ভর্তি হন। এর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তার মৃত্যু হয়। সিভিল সার্জনের বরাত দিয়ে ডা. জয়ন্ত সরকার জানান, ওই নারী মেডিকেলে ভর্তির পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এখনো তার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে গতকাল দুপুরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে আজিজুল হক (৬৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নোয়াখালী পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তাজ মাহতাবপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। হাসপাতালের আরএমও সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, ওই ব্যক্তি কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। সকাল ৮টায় তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরি বিভাগ থেকে আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পর বেলা ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। করোনা উপসর্গ থাকায় মৃতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment