ফারুক রাজ, সাতক্ষীরা:
করোনার এ অবেলায় অসুস্থতায় যে কাল হয়ে দাঁড়াবে তা কে জানতো৷ অসুস্থ্য হওয়ায় পরিবার ও এলাকার মধ্যে তার করোনা হয়েছে এমন আতঙ্কের গুজব ছড়িয়ে পড়ে৷ দিনমজুর মামা ও খালুদের কাছে থাকা অসুস্থ ফেরদৈসি খাতুন নামে এক মহিলার করোনা সন্দেহে এলাকার এক রাস্তার মাঝে ফেলে রেখে যায় তার স্বজন৷ সোমবার (১৫ জুন) বিকালে সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের গনপতিপুর দমদম বাজার সংলগ্ন গাজী পাড়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷
কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, ঘটনাটি জানার পর এসআই (নিঃ) মো. ইস্রাফিল হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠাইলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধা মহিলাকে উদ্ধার করে তার স্বজনদের নিকট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে অসুস্থ ঐ রোগীর ঔষধ ও খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং হাসপাতালে নিয়ে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বৃদ্ধার আত্মীয় সজ্বনদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । এসময় তিনি আরও বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। কোন অসহায় বৃদ্ধ পিতা-মাতা যেন অবহেলায় অযত্নে বিনা চিকৎসায় মারা না যায় আমাদের সবাইকে সেই দিকে নজর রাখতে হবে। অসুস্থ এ মহিলার আপন বলতে খালা খালু ছাড়া দেখার মত কেহ নাই৷
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাজেদ হোসেন বলেন, ঐ পরিবারের ও এলাকাবাসী সকলে ভেবেছিল করোনা ভাইরাস হয়েছে তাই চিকিৎসার জন্য একটা ভ্যানে তুলে দিয়েছিল তার স্বজনেরা৷ পথের মধ্যে ভ্যান চালক করোনা সংক্রমণের ভয়ে অসুস্থ ফেরদৌসীকে রাস্তার পাশে রেখে পালিয়ে যায়৷ এ ঘটনা জানতে পেরে থানা পুলিশে ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের নিকট উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক কিছু সহায়তা দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য পরামর্শ দেয়৷
ঘটনার সত্যতা শিকার করে অসুস্থ ফেরদৌসীর খালু সেলিম হোসেন ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ বিরল ক্যান্সার রোগে ভুগছিল সম্পর্কের মেয়ে ফেরদৌসী৷তার নিয়ে করোনা সন্দেহে এলাকায় যেন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল৷ ফেরদৌসী আমার স্ত্রীর বুনের মেয়ে৷ আপন বলতে আমরা ছাড়া তার কেহ নাই৷ দীর্ঘদিন যাবত সে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছেন৷ আমরা খুবই অসহায় কোনো রকম দু’বেলা দুমুঠো নুন ভাত খেয়ে দিন যায়৷ তার উপর আবার এ অসুস্থ্য রোগী নিয়ে খুব কষ্টে দিন যায়৷সাধ্য মত তার চিকিৎসা করে যাব তবে সহযোগীতা পেলে অসুস্থ ফেরদৌসীর উন্নত চিকিৎসা করাতে পারতাম৷