সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ঈদের আগে ঢাকাসহ সারাদেশে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছিলো সরকার। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। বরং আরও বেশি দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি ঘটেছে। যা গত সাত বছরের মধ্যে ঈদযাত্রায় সর্বোচ্চ। যার মধ্যে আবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে সেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাতেই। এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার সার্বিক চিত্র তুলে ধরে বরাবরের মতো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ঈদের আগে ও পরের ১৫দিনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সংগঠনটি মঙ্গলবার জানিয়েছে, এই ঈদযাত্রায় গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ (৩১৯টি) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৯৮জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৭৪জন। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (১৩১) মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তাতে বলা হয়েছে, এই ১৫দিনে (৩ থেকে ১৭ জুলই) ১১৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৩১ জন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৫.৪২ শতাংশ। আর মোট নিহতদের ৩২.৯১ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার।
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, কোনো পদক্ষেপেই কোনো কাজ হয়নি। ঈদের আগে সরকার বারবার বলেছিলো, মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো হবে। কিন্তু এসব পরিসংখ্যান বলছে, মোটরসাইকেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি সরকার। বিশেষ করে জেলা-উপজেলায় এবার মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে বলে পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।
আমরা জানি, সারাদেশে সড়ক ব্যবস্থাপনায় এক ধরনের নৈরাজ্য চলছে। বিশেষ করে জাতীয় সড়কগুলো ব্যাটারিচালিত ভ্যান-রিকশা, ইজিবাইকের মতো ধীরগতির যান পুরো সড়ককে ধীরগতির করে দিচ্ছে। এছাড়াও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি, উল্টো পথে যানবাহন চালানোসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছেই। অথচ এ নিয়ে কারো কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না বললেই চলে।
এভাবে আর কতোদিন চলবে? কোনোভাবেই কি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব না? আমরা মনে করি, দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে প্রতিদিনই সড়কে মৃত্যুর মিছিল বড় হতেই থাকবে।