স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া দেশের প্রত্যেকেরই সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার বাস্তবায়নে সরকার অঙ্গিকারাবদ্ধ। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধপথ্যসহ রোগ নির্ণনয়ের যাবতীয় ব্যবস্থা করে। ঘুরে ফিরেই অভিযোগ ওঠে, হাসপাতালে ওষুধ মেলে না। চিকিৎসক ওষুধ লেখেন, সেবিকাদের অনেকেই রোগীর বা রোগীর লোকজনের হাতে চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ওষুধটা বাইরে থেকে কিনে আনেন।
কেনো? চিকিৎসক যে ওষুধ লিখলেন সেই ওষুধ হাসপাতালে নেই কেনো? এ প্রশ্ন তুললে অধিকাংশ সময়ই সরল একটি জবাব মেলে, তা হলো- ওই ওষুধ যেটুকু বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিলো তা ফুরিয়ে গেছে। রোগীর সংখ্যা অনুপাতে বরাদ্দে অপ্রতলতা থাকলেও কবে কখন কি পরিমাণের বরাদ্দ পাওয়া যায়, কবে শেষ হয় তা জানার জো নেই অধিকাংশ রোগী সাধারণের। ফলে হাসপাতালে থাকা ওষুধের ফিরিস্তি নির্দিষ্ট ফলকে প্রতিদিনই হালনাগদ করে লিখে রাখার কথা। তা কি হয়? অভিযোগ আছে, চিকিৎসক লেখার পর ওই ওষুধ রক্ষণাগার থেকে ঠিকই বের হয়, সুযোগ বুঝে গচ্ছিত করাগুলো পাচার হয় সুবিধাজনক সময়ে। বঞ্ছিত হন রোগী। হতদরিদ্র রোগীর দূরদর্শার শেষ থাকে না। তাছাড়া কিছু ওষুধ আছে যা বরাদ্দ ও ব্যয় সবই থাকে খাতা-কলমে। এটা রক্ষণাগারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির একার পক্ষে সম্ভব নয়। এরকম দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেরই সংশ্লিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। সবসময়ই যে এরকম দুর্নীতি হয় তা নয়। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলার সকল সরকারি হাসপাতালের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া বন্ধ করে হাসপাতালে সরাসরি বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছে। সরকারের উদ্দেশ্য সফল হলে সুবিধাপাবে রোগী সাধারণ। মহৎ উদ্দেশ্য তখনই বিঘিœত হয় যখন অনিয়ম দুর্নীতি ব্যপকতা পায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের যারা ওই ওষুধ আদান প্রদানের আড়ালে অর্থ হাতানোর সুযোগ নিয়ে অভ্যস্ত বলে অভিযুক্ত তাদের কেউ কেউ এখন হাসপাতালে বদলি হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ উঠছে। বিষয়টির দিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি দেয়া দরকার। তা না হলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য মাঠে মারা যাবে। চিকিৎসা সেবার মানবৃদ্ধিতে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরী।