সম্পাদকীয়
আজ দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের উৎসবের দিন। আজ প্রকাশনার ৩২ বছরে পর্দাপণ। সৃষ্টি সুখের উল্লাস। যদিও উৎসবে আনুষ্ঠানিকতা নেই। হৃদয়ে লেগে থাকা আনন্দ নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস, প্রতিজ্ঞা। আজকের শুভ দিনে পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা, শুভানুধ্যায়ী সকলকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
১৯৯১ সালে ২৬ মার্চ দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকা প্রথম পাঠককূলের হাতে পৌঁছুয়। ওইদিনের সংখ্যাটি ছিলো প্রস্তাবিত। কারণ, পত্রিকা প্রকাশের ছাড়পত্র পাওয়ার আশায় আর্জি জানিয়ে একদল টগবগে তরুণ অনানুষ্ঠানিকভাবে পত্রিকার আত্মপ্রকাশ করলেও ছাড়পত্র পেয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ওই বছরের ১০ জুন। বহু চড়াই উৎরাই ঘেরাটোপ পেরিয়ে ৩১টি বছর মাড়িয়ে আজ ৩২ বছরে দৈনিক মাথাভাঙ্গা। শুরুতে চুয়াডাঙ্গা আর মেহেরপুরের মুখপত্র হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সময়ের সাথে সাথে সম্প্রসারিত হয়েছে পরিধি। স্থানীয় পত্রিকা হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক পত্রিকা। দীর্ঘ পথচলায় দৈনিক মাথাভাঙ্গা কতোটা পেরেছে, কতোটা পারেনি, কতোটা পারতে পারতো এ বিচারের ভার অবশ্যই পাঠককূলের ওপর। পাঠকরাই দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের অগ্রযাত্রার অদম্য সাহস। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা। সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করে আলো ছড়ানোর নির্দেশক।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা’র দীর্ঘ পথচলায় সহযোগী-সহযোদ্ধার সংখ্যা অসংখ্য। সকলের প্রতি যেমন অকৃত্রিম ভালবাসা, তেমনই প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিনুসহ যাদেরকে হারাতে হয়েছে তাদের সকলের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা। দৈনিক মাথাভাঙ্গা প্রতিষ্ঠাতা তথা মুদ্রাকর ও প্রকাশক সরদার আল আমিন দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বপালনের পর নিজেকেই নিতে হয় সম্পাদনার দায়িত্ব। পত্রিকা প্রকাশের প্রথম দশক কেটেছে হাতে শিশার অক্ষর সাজিয়ে ছেপে পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার মত অভাবনীয় পরিশ্রমের কাজ। পরবর্তিতে আধুনিক ছাপাখানায় উন্নীত। মাঝে কিছুদিন ৪ রঙে ছেপেও পাঠককূলের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা চলেছে। করোনা ভাইরাস থমকে দিয়েছে সেই অগ্রযাত্রা। করোনা কতোটা পিছিয়ে দিয়েছে তা বর্ণনা করে শেষ করা কঠিন। তারই ধকল চলছে। অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যের ঊর্র্ধ্বগতির ধকল পোয়াতে গিয়ে মাথাভাঙ্গা পরিবারকেও খেতে হচ্ছে হিমশিম। যে কাগজ করোনার আগেও কিনা হতো সাড়ে ৩শ টাকা, সেই কাগজ এখন ৮শ টাকা। যে প্লেট ছিলো ৫০টির দাম সাড়ে ৬ হাজার, এখন তা প্রায় ১৬ হাজার। কালির দামও আকাশ ছোঁয়া। মাঝে মাঝে দেখা দিচ্ছে তীব্র সংকট। এতো কিছুর পরও পাঠককূলের প্রিয় পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টায় কমতি নেই।
দৈনিক মাথাভাঙ্গা যেমন মুদ্রিত সংখ্যা দেশের জেলা পর্যায়ের হিসেবে শীর্ষস্থানে, তেমনই ইন্টারনেট সংস্করণেও দৃষ্টান্ত স্থাপনের পথে। পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ীর সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকলে মাথাভাঙ্গা পরিবার আরও দায়িত্বশীল হবে। এ প্রত্যাশায় আবারও শুভেচ্ছা, সালাম।