বিপর্যস্ত নিম্নআয়ের মানুষ যথাযথ উদ্যোগ জরুরি

চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে যাচ্ছে। বেড়েছে ঘন কুয়াশা। গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার থেকে শীতের তীব্রতাও অনেক বেশি। এদিন নওগার বাদলগাছীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আমরা বলতে চাই, শীত বাড়লে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য তা ভীষণ কষ্টের। উপার্জনে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তেমনি শীত নিবারণ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। শৈত্যপ্রবাহের কষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও তাদের থাকে না। ফলে, অসহায় ও হতদরিদ্রদের কষ্ট কেবল বেড়েই যায়। খবরে উঠে এসেছে যে, হাজারো দিনমজুর শীতের কষ্টে আছেন। কাজ না পেয়ে অনেকেই অলস সময় পার করছেন। উত্তরের হিমেল বাতাসে কনকনে ঠা-ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সেই জেলার জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে, বিশেষ করে-রিকশাচালক, দিনমজুর, কুলি ও কৃষি শ্রমিকরা পড়েছেন বেশি বিপাকে। পাশাপাশি ছিন্নমূল, শ্রমজীবী ও নদনদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ আরও কষ্টে আছে। কাজ না পেয়ে সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় এসব খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ-এটাও খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে।
আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে এটাও এড়ানো যাবে না যে, শীত নিবারণে এ বছর সরকারিভাবে গরিবদের জন্য যে কম্বল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলেও জানা গেছে। এছাড়া, নানা স্থানে শীতের তীব্রতায় মানুষের কষ্ট বেড়েছে, বেড়েছে ভোগান্তি। বলা দরকার, শীতে অনিবার্যভাবেই প্রকৃতিতে ঘটে কিছু পরিবর্তন। অল্প শীত উৎসবের আমেজ নিয়ে এলেও তীব্র শীত জীবনযাত্রা বিপন্ন করে তোলে মানুষকে। বিশেষ করে দরিদ্ররা শীতের কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। এ সময় শীতজনিত নানা রোগব্যাধিও দেখা দেয়। এ কারণে শীত মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের তীব্রতা ও জনদুর্ভোগের বিষয়টি জানা যাচ্ছে-যা আমলে নিতে হবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।
সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় রাখা জরুরি-শীত মরসুমে শিশুদের ঠা-াজনিত নানারকম রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ ঠা-াজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় শিশুরা। এছাড়া, নানা বয়সি মানুষ শীতজনিত রোগে ভোগে। সঙ্গত কারণেই শীতজনিত রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষার করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু সরকার নয়, সমাজের বিত্তবানরাও এ জন্য এগিয়ে আসতে পারেন। আর এই লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে শীতে জনজীবনের দুর্ভোগ সংক্রান্ত পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। একইসঙ্গে বলা দরকার, এর আগে জানা গিয়েছিলো, গত বছরের তুলনায় এবারের জানুয়ারিজুড়ে শীত বেশি পড়বে এটাও আলোচনায় এসেছে। যা কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এবং তীব্র শীত মোকাবেলায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।