দিনগুলো যেমন যাচ্ছে এরকম থাকবে না

দিনগুলো যেমন যাচ্ছে এরকম থাকবে না। একেতো ছোঁয়াছে রোগের প্রকোপ, তার ওপর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড় বৃষ্টি। আবার নাকি বঙ্গোপ সাগরে সৃষ্টি হচ্ছে ঝড়। ওই ঝড় শেষ পর্যন্ত কতটা ভয়ানক হয়ে আঘাত হানবে নাকি সাগরেই শক্তিহারাবে তা আজ কালের মধ্যেই স্পষ্ট হবে। গতরাতে চুয়াডাঙ্গায় কালবোশেখী ঝড়ে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে জানা না গেলেও মাঠে পাকাধানের যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা বুঝতে বাকি নেই। এসব ধকলের পরও যে বিষয়টি নিশ্চিত তা হলো, ধর্য্য সহ্য করতে পারলে সামনে স্বস্তির দিন আসবে, আসবেই। তবে তার আগে পদে পদে সতর্ক হতে হবে।
নোভেল করোনা ভাইরাস যখন দূরত ছড়িয়ে পড়ছে, তখনও চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরসহ উপজেলা শহরগুলোতে ঈদ কেনা কাটার নামে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ মানুষের অসচেনতার কারণেই মূলত গতকাল প্রশাসন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ছাড়া বাকি বিপনি বিতানগুলো পূর্বের মতো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চললে প্রশাসনকে নিশ্চয় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। তাছাড়া সকলকেই তো নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিজেদের স্বার্থেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়োমগুলো মেনে চলা উচিত। দোকান খোলার সাথে সাথে উপচে পড়া ভিড়, রাস্তায় হুড়োহুড়ি, অটো বা ইজিবাইকে চলাচলের হিড়িক অবশ্যই দায়িত্বশীলদের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দোকান খোলার অনুমোদন না পেয়ে দোকানি ও ক্রেতারা আড়ালে আবডালে ভিড় জমালে তা নিশ্চয় সুখবর হবে না। মনে রাখতে হবে, ভাইরাসের প্রকোপ বেশিদিন থাকবে না। প্রতিষেধক আবিষ্কারই শুধু হবে না, সব কিছু ঠিক ঠাক রেখেও ভাইরাসমুক্ত হবে মানুষ। এর আগে সুস্থ থাকতে বা বাঁচতে হলে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। তাছাড়া ঝড় বৃষ্টি? ষড়ঋতুর দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার বিকল্প নেই। দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই দরকার প্রস্তুতি। সাড়রে নি¤œচাপ সৃষ্টি হয়েছে, সূত্রপাত হয়েছে ঝড়ের। এ ঝড় সম্পর্কে একসময় আগাম জানার সুযোগ ছিলো না, এখন সবই জানা যায়। ঝড় কোন দিক থেকে কোন দিকে আঘাত হানতে যাচ্ছে তাও আবহাওয়া অধিদফতর ঘটা করে জানিয়ে দিতে সক্ষম। পূর্বাভাস জেনে ক্ষতি হ্রাসের যতোটা প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয়, ততোটাই ক্ষতি কম হয়।
আর মনে হয় বাঁচা গেলো না! এরকম দীর্ঘশ্বাসমাখা দুশ্চিন্তয় হাবুডুবু খাওয়া মানে পরাজয় মেনে নেয়া। মনে রাখা দরকার জীবন মানেই যুদ্ধ। প্রতিপক্ষকে যতোটা জানা যায় ততোটাই যুদ্ধজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। যেহেতু বিশ্বে মানুষের সামনে এখন বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস, সেহেতু একে জানার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যতোটুকু জানতে পেরেছে অতোটুকুর ওপরই বিশ্লেষণ করে জীবন রক্ষার্থে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। বলেছে, মাহমারি থেকে বাঁচতে হলে সকলকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। মানতে হবে স্বাস্থ্য বিধি। আর ঝড় বৃষ্টি বজ্রপাত? এতো বহুদিনের চেনা।

Comments (0)
Add Comment