ডেস্ক নিউজ:
মেহেরপুরের মুজিবনগরে অনিবন্ধিত ৫টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে সিলগালা করে দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনিবন্ধিত ওই ৫ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের আন্দুলবাড়ীয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জরিমানা করা হয়। তাদের কাগজপত্র হালনাগাদ না থাকায় এ জরিমানা করা হয়। একইসাথে সকল কাগজপত্র এক সপ্তাহের মধ্যে হালনাগাদ করা না হলে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। অপরদিকে, ঝিনাইদহের মহেশপুরে ৩টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয় এবং ৮টি প্রতিষ্ঠানে সতর্কীকরণ নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরের আন্দুলবাড়ীয়ায় দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া বাজারে ওই অভিযান চালানো হয়। জীবননগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) তিথি মিত্র অভিযান পরিচালনা করেন।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের দুটি ডায়াগণস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. দাউদ হোসেনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. রকিবুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সাথে এক সপ্তাহের ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ করা না হলে ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। অভিযানে সহযোগিতা করেন জীবননগর থানা পুলিশের একটি দল।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ ছিলো রোববার পর্যন্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারণ করা দিন পর্যন্ত এ সকল প্রতিষ্ঠানকে সর্তক করেছিলো জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সিলগালা করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মুজিবনগর বাজারের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিয়াম ডায়াগনস্টিক ও ডিজিটাল ল্যাব, জারা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুজিবনগর স্টার ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাজি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধিত না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে সিলগালা করা হয়।
এসময় নিবন্ধন থাকলেও নবায়ন না থাকায় কুদরত-ই-খোদা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বল্লভপুর হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে নবায়ন করতে ৭ দিনের সময় বেধে দিয়ে নোটিশ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা আগেই সর্তক করেছিলাম যেনো নিবন্ধন করে নেয় বা নিজে থেকেই এসকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেন। কিন্তু তারা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করায় প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় উপজেলার যাদবপুর বাজারে অবস্থিত স্বপ্ন ছোঁয়া প্রাইভেট হাসপাতাল, পদ্মপুকুর বাজারে নিউ মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও মহেশপুর বাস্ট্যান্ডে পদ্মা ল্যাব এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সীলগালা করে দেয়া হয়। এছাড়া মহিউদ্দিন প্রা. হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল, একতা ক্লিনিক, নিউ মডার্ণ ক্লিনিক, শিহাব প্রা. হাসপাতাল, মডার্ণ প্রা. হাসপাতাল ও সজিব হাসপাতালকে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, মহেশপুর উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই বিধি মেনে পরিচালনা করতে হবে। লাইসেন্সবিহীন একটি প্রতিষ্ঠানও চলতে দেয়া হবে না। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মকলেচুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।