স্টাফ রিপোর্টার: এবার বিয়ের পাত্রী দেখতে চুয়াডাঙ্গায় এসে ধরা পড়লো পুলিশের ভুয়া এসআই সোহেল রানা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের শেখপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও নগদ টাকা। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে ঝিনাইদহ থেকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় কৌশলে চুরি করা মোটরসাইকেল। এর আগে পুলিশ পরিচয়ে ওই পাত্রীরই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় সোহেল রানা। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এসব অপরাধ স্বীকার করেছে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়দানকারী প্রতারক সোহেল রানা ওরফে হিমেল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা হয়েছে। গত বছরের ১৯ এপ্রিল ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় সোহেল রানাকে আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। সেবারও নিজেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়েছিলো কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার আমবাড়িয়া গ্রামের মণ্ডলপাড়ার আজিবার রহমানের ছেলে সোহেল রানা।
পুলিশ জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শেখপাড়ার জহুরুল ইসলাম মানিকের মেয়েকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে নিজের বিয়ের পাত্রী হিসেবে দেখতে যায় সোহেল রানা। এ সময় তার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় কনের পরিবারের। এ সময় কনের বাড়ির ভাড়াটিয়া আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত এসআই আব্দুল গাফফার জিজ্ঞাসা করলে সোহেল রানা যশোর মনিরামপুর থানায় কর্মরত এসআই সুমন বলে জানায়। নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওই থানায় যোগাযোগ করা হলে স্পষ্ট হয় যে, সেখানে সুমন নামের কোনো এসআই নেই।
এরপর সকলের সন্দেহ হলে খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে পুলিশ নয় বলে স্বীকার করে। তার কাছে থাকা পালসার মোটরসাইকেলটিও (ঝিনাইদহ-ল-১২-১০২১) চুরি করা বলে জানায় সোহেল রানা। এরপর তার স্বীকারোক্তিতে শহরের হোটেল ভিআইপি’র বরাদ্দ নেয়া একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও নগদ সাড়ে আট হাজার টাকা। গতকাল পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক আসামির জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় নগদ ১২ হাজার টাকা। যার মধ্যে উদ্ধার হয় ৮ হাজার ৫শ’ টাকা।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতেই প্রতারক সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে চুরি করা মোটরসাইকেলের মালিক তারেক হোসেন চুয়াডাঙ্গা থানায় হাজির হন। এ সময় তিনি বলেন, গত ১৫ মার্চ পুলিশের পোশাক পরহিত অবস্থায় ট্রায়েল দেয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়ে এই সোহেল রানা।
এর আগে আদালতের নথি জাল করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেয়ার নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার হয় সোহেল রানা। পুলিশের উপ-পরিদর্শককে (এসআই) পরিচয় দেয়া সোহেল রানাকে সে সময় চুয়াডাঙ্গা আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ জানান, সোহেল রানার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা ও চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।