গাংনী প্রতিনিধি:
স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে স্বামী আসাদুজ্জামানকে (৩৫) হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগে আসাদুজ্জামানের পরিবারের মামলার প্রেক্ষিতে মৃত্যুর দুই বছর পরে কবর থেকে তোলা হলো মরদেহ। গতকাল সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চাঁন্দামারী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করে ফরেনসিকে পাঠায় পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেন ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি দল মরদেহ উত্তোলন করে। আসাদুজ্জামান আসাদ আলমডাঙ্গা উপজেলার মোচাইনগর গ্রামের নওদাপাড়ার মৃত আব্দুল জলিল মাস্টারের ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই মাসুম বিল্লাহ জানান, আসাদুজ্জামানের স্ত্রী মোনালিসা লোপা চুয়াডাঙ্গার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। চুয়াডাঙ্গা বসবাসকালীন সময়ে গোপনে তিনি পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। নরসিংদি জেলার হুমায়ন নামের এক ব্যক্তি দুবাই থাকা অবস্থায় মোবাইলে লোপার সাথে পরকীয়া প্রেম করতেন। হুমায়নের কাছ থেকে অনেক টাকা নেয় লোপা। সম্পর্কের এক পর্যায়ে দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু লোপা অন্য আরেক ব্যক্তির সাথে আরও একটি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে তিনি হুমায়নকে এড়িয়ে চলতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে আসাদুজ্জামানের পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগ করে হুমায়ন। পরকীয়া প্রেম আর হুমায়নের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগটি আসাদুজ্জামানের ভাইকে জানান হুমায়ন। খিচুড়ির মধ্যে বিষ মিশিয়ে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করা হয়েছে বলে হুমায়ন জানান তাদের। পরবর্তীতে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।
এদিকে অভিযোগের মধ্যেই হুমায়নের সাথে লোপার আবারও সুসম্পর্ক হয় আসাদুজ্জামানের। মৃত্যুর ৫ মাসের মাথায় লোপার সাথে বিয়ে হয় হুমায়নের। এতে হত্যাকাণ্ডের সাথে হুমায়নের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে সন্দেহ হয় আসাদুজ্জামানের পরিবারের। পরবর্তীতে লোপা, হুমায়ন ও লোপার অপর পরকীয়া প্রেমিককে আসামি করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই হাসানুজ্জামান লিটন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে হুমায়নকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। তবে লোপাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মহসিন আলী (পিপিএম) জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। যেহেতু দুই বছর আগে তার মৃত্যু তাই মরদেহের অনেক অংশ পাওয়া যাবে না। হাড়গোড় যা কিছু পাওয়া গেছে তা পুলিশের ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে।
ইউএম/১৫০৩২২-০৭/২০