মুকুটাকৃতির মারণ ভাইরাসের উপস্থিতি রেখে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা স্পষ্ট
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের মিলন ফার্মেসির মালিক সহিদুল ইসলাম মিলন মারা গেছেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে তাকে হাসপাতাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে নেয়া হয়। পথিমধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়েন তিনি। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ৪২জন, বাকি ৪জন ঢাকায় মারা যান।
চুয়াডাঙ্গায় টানা ৭দিন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত না হলেও ৮ দিনের মাথায় গতকাল বুধবার একজন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জের বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬শ ৫৮জন। গতকাল আরও ৩জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ১ হাজার ৬শ ৪জন। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে একজন, বাড়িতে ৬জন ও চুয়াডাঙ্গা থেকে রেফারকৃত ঢাকায় একজন আইসোলেশনে ছিলেন। ঢাকায় রেফার রোগী জাহানারা খাতুন চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ডিহি কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা। এদিকে গতকাল মারা গেছেন সহিদুল ইসলাম মিলন। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গুলশানপাড়ার মরহুম আনছার আলীর ছেলে। হাসপাতাল গেটের অদূরেই তার ওষুধেরে দোকান রয়েছে। মিষ্টভাষী সহিদুল ইসলাম মিলন গত ৪ জানুয়ারি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরদিন তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি হন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার এক পর্যায়ে করোনা পুনঃপরীক্ষার জন্য ১৮ জানুয়ারি আবারও নমুনা দেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট কোভিড-১৯ নেগেটিভ এলেও শ^াসকষ্টসহ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ বিদ্যমান ছিলো। ফলে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন থাকেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে তার পারিবারিক উদ্যোগে ঢাকায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে তাকে ঢাকার উদ্দেশে নেয়া হয়। রাজবাড়ী পৌঁছে মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়েন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৪৫ বছর। মিলন ফার্মেসির মিলনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিচিতদের মধ্যে শোক নেমে আসে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মরহুমের লাশ জানাজা শেষে দাফন করা হবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সমাজে নোভেল করোনা ভাইরাস তথা নতুন মুকুটাকৃতির ভাইরাসের উপস্থিতি স্পষ্ট। এরপরও মাস্কপরাসহ স্বাস্থ্যবিধি সর্বক্ষেত্রে যথাযথভাবে মেনে চলা হচ্ছে না। শীতে মারণ এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে পদে পদে। ফলে সতর্ক না হলে ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।