শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত¦না দিলেন মাউশি উপপরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ অসংখ্য মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার: অসংখ্য মানুষের মনখোলা দোয়া নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সদালাপী ধার্মিক নারী সালেহা বেগম। গতকাল বেলা ১১টায় দামুড়হুদার ছোটবলদিয়া গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়। এর আগে সকাল ৮টায় প্রথম দফা নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শান্তিপাড়ার আল হেলাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। দু’স্থানের নামাজে জানাজায় অসংখ্য মুসল্লি শরিক হন।
মরহুমা সালেহা বেগম ছিলেন চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার বাসিন্দা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত হাজি রবিউল ইসলামের স্ত্রী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের প্রধান সহকারী মনিরুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের মা। সালেহা বেগম গতপরশু বুধবার সন্ধ্যায় সকলকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। এদিকে, সালেহা বেগমের মৃত্যুর খবরে খুলনা থেকে ছুটে এসে শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠকসহ মনিরুল ইসলামের সহকর্মীরা। দ্বিতীয় নামাজে জানাজায় শরিক হন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিসার বিলাল হোসেন, দর্শনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান, আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার অসংখ্য মানুষ।
প্রথম দফা নামাজে জানাজায় দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক সরদার আল আমিনসহ রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ মরহুমার স্বামী, দু’ছেলেসহ অসংখ্য মুসল্লি শরিক হন। নামাজের আগে মহল্লাবাসীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রতিবেশী আনোয়ারুল হক মালিক। আজ শুক্রবার বাদ জুমা শান্তিপাড়া ও ছোটবলদিয়া জামে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা অনুষ্ঠিতব্য মিলাদ মাহফিলে সকলকে উপস্থিত থেকে দোয়া করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মরহুমার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা।
মৃত্যুকালে সালেহা বেগমের বয়স হয়েছিলো ৫৮ বছর। তিনি ডায়াবেটিক, রক্ত স্বল্পতাসহ হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার বিকেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে নেয়া হয় ঢাকার উদ্দেশে। পথিমধ্যে সন্ধ্যায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃতদেহ শান্তিপাড়াস্থ বাসভবনে নেয়া হলে মরহুমাকে শেষবারের মতো দেখতে নারী-পুরুষের ঢল নামে। শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছুটে আসেন রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজের প্রায় সর্বস্তরের মানুষ।
সকাল ৮টায় শান্তিপাড়ার আল হেলাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজায় শরিক হওয়ার জন্যও মসুল্লির ঢল নামে। প্রথম দফা নামাজে জানাজা শেষে নিজ গ্রাম দামুড়হুদার ছোটবলদিয়ায় নেয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য মানুষ। ভিড় সামলাতেও হিমশিম খেতে হয়। শোকার্ত পরিবারের তরফে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরহুমাকে শেষবারের দেখার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় উপস্থিত হন মাউশি খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকসহ অনেকে। শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত¦না দেন। দ্বিতীয় দফা নামাজের আগেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পৌঁছুন। তিনিও শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত¦না দেন। নামাজে জানাজায় শরিক হন। দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন জেলা শিক্ষা অফিসার।
প্রসঙ্গত, মনিরুল ইসলামের কর্মজীবন শুরু হয় দৈনিক মাথাভাঙ্গার মধ্যদিয়ে। পরবর্তিতে কর্মের সুবাদে দূরে গেলেও মাথাভাঙ্গার উন্নয়নে থেকেছেন এবং আছেন। তাঁর মায়ের মৃত্যুতে মাথাভাঙ্গা পরিবার গতকাল শোক পালন করে মরহুমার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সবসময় পাশে থেকেছে।